দিশা ইসলাম, বিধাননগর: চারিদিকে জলধারা। তার মাঝখানে মস্ত আকৃতির গম্বুজ। গগনচুম্বী পুরো গম্বুজটিই সোলার প্যানেলে মোড়া। স্যাটেলাইট নিউটাউন শহরের মূল আকর্ষণীয় ইকো পার্কের ভিতরের এক প্রান্তে সেটি গড়ে উঠেছে। কর্তৃপক্ষ যার নামকরণ করেছে 'সোলার ডোম' বা সৌর গম্বুজ। যা পার্ক ঘুরতে আসা দর্শকদের কাছে ইতিমধ্যেই নজর কাড়তে শুরু করেছে।
এ রাজ্য তো বটেই, অল্প সময়ে দেশের পর্যটন মানচিত্রে বিরাট পরিচিতি লাভের পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে সুনাম কুড়িয়েছে ইকোপার্ক। প্রকৃতি তীর্থের ভিতর 'ধামসা' ট্রাইবাল রেস্তোঁরা রয়েছে। তার পাশেই প্রায় ৭-৮ তলা বাড়ি সমান নজর কাড়া সোলার ডোমটি ঘিরে এই মূহূর্তে পার্ক ঘুরতে আসা দর্শকদের কৌতূহলে তুঙ্গে। সেই ঔৎসুক্যের অবসান ঘটাতে সোলার ডোমটি খুলে দিচ্ছে পার্ক কর্তৃপক্ষ হিডকো। সংস্থার মতে, আগামী শীতের মরশুমের আগে ইকো পার্কের দর্শনার্থীদের আরও আকর্ষণ বাড়াবে সৌর গম্বুজটি। আজ, মঙ্গলবার বিকেল ৪-টে নাগাদ রাজ্যের মন্ত্রী তথা হিডকোর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিমের হাত ধরে সোলার ডোমের গেট খুলে দেওয়া হবে। রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থা, হিডকো ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের সহযোগিতায় সুইজারল্যান্ডের একটি নামজাদা সংস্থার পরামর্শে তৈরি হয়েছে সৌর গম্বুজটি।
হিডকো সূত্রে খবর, বিশ্ব উষ্ণায়নের যুগে বিকল্প শক্তি ব্যবহারে পড়ুয়া ও পার্ক দর্শনার্থীদের হাতে-কলমে পাঠ দিতে ২০১৯ সাল থেকে সৌর গম্বুজটির তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। মূলত লোহার কাঠামো, কাঁচ, সোলার প্যানেল ইত্যাদিতে তৈরি গম্বুজটির প্রায় ছ'বছর ধরে কাজ চলেছে। সেটি জুড়ে প্রায় ২ হাজার সোলার প্যানেল রয়েছে। সেখান থেকে রোজই ১৮০ কিলোওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা। এই সৌর বিদ্যুত ব্যবহারে সোলার ডোমের ভিতরের আলো, পাখা, কম্পিউটার, লিফট-সহ পার্কের আলোও জ্বলবে। হিডকোর আধিকারিকদের মতে, আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে গেলে দরকার বিকল্প শক্তির ব্যবহার। বর্তমানে বিশ্বের উন্নতশীল দেশগুলিতে সৌর, বায়ু, গোবর ইত্যাদি শক্তির প্রচলন অনেকটাই বেড়েছে। তাই এ রাজ্যে বিকল্প শক্তির ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আমজনতার উৎসাহ বাড়াতে বিরাট আকারের সোলার ডোমটি তৈরি হয়েছে। যার ভিতর জুড়ে থাকছে গ্যালারি, স্ক্রিন-প্রজেক্টর, সেমিনার হল, প্ল্যানেটরিয়াম, মেরিন একোয়ারিয়াম, ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ পয়েন্ট ইত্যাদি।