সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করতে মরিয়া চিন। এবার ঢাকাকে কার্যত হুমকি দিয়ে বেজিংয়ের বক্তব্য, বাংলাদেশ QUAD গোষ্ঠীতে যোগ দিলে ফল ভাল হবে না।
[আরও পড়ুন: বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের সময়সীমা বেঁধে দিল বাংলাদেশ প্রশাসন]
রাজধানী ঢাকায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে চিনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, “বাংলাদেশ যদি চার দেশের QUAD গোষ্ঠীতে যোগ দেয় তাহলে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমরা চাই না যে বাংলাদেশ ওই মিত্রজোটে কোনওভাবেই যোগ দিক।” কার্যত হুমকির সুরে চিনা রাষ্ট্রদূত পরিষ্কার জানিয়ে দেন যে ‘চিন বিরোধী’ কোয়াডে যোগ দিলে বাংলাদেশকে এর পরিণাম ভোগ করতে হবে। এই বার্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলে জানান জিমিং। বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের উপর ভারতের প্রভাব যেনতেন প্রকারে খর্ব করতে মরিয়া চিন। তাই কোয়াড নিয়ে হাসিনা প্রশাসনের উপর চাপ তৈরি করছে শি জিনপিংয়ের সরকার। এর আগে করোনার টিকা দেওয়ার অছিলায় ঢাকার উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছে বেজিং।
উল্লেখ্য, চিনকে (China) নজরে রেখে ব্লক তৈরির চেষ্টা শুরু হয়েছিল সেই ২০০৭ সাল থেকেই। অবশেষে বেজিংয়ের রক্তচক্ষুকে অবজ্ঞা করে গত মার্চ মাসে প্রথম চতুর্দেশীয় অক্ষ বা QUAD রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। লালফৌজকে নজরে রেখে কোয়াড গোষ্ঠীর চার সদস্য দেশ– ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কৌশলগত আদানপ্রদান গভীর করাই এই মঞ্চের লক্ষ্য বলে প্রাথমিক বিবৃতিতে জানান নেতারা। বিশেষ করে, চিনকে রুখতে ভারতই যে আমেরিকার ভরসা তা আবারও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বলে রাখা ভাল, পূর্ব লাদাখ সীমান্তের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সামরিক সংঘাত উদ্বেগ বাড়িয়েছে কোয়াড গোষ্ঠীর। দক্ষিণ চিন সাগর এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা নৌবহরের ক্রমবর্ধমান দাপট আমেরিকার জন্য অস্বস্তির। ভারত-চিন বিতর্কে কোয়াড গোষ্ঠী নয়াদিল্লির পাশেই রয়েছে। তেমনই আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা রেখে দেওয়ার ব্যাপারে সায় দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক্ষেত্রেও চিন্তা বা দুশ্চিন্তা সেই বেজিং। হোয়াইট হাউসের আশঙ্কা, কাবুল থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলে আফগানিস্তানে দাপট প্রতিষ্ঠা করবে লালফৌজ। পারস্পরিক স্বার্থ সুরক্ষিত করার মাধ্যমে একজোট থাকতে চায় ওয়াশিংটন, নয়াদিল্লি, টোকিও এবং ক্যানবেরা।