সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনে ইতি টেনে মার্কিন মসনদে বসেছেন জো বাইডেন (Joe Biden)। মনে করা হচ্ছিল, এবার হয়তো চিনের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে পারে আমেরিকা। কিন্তু সেই জল্পনায় জল ঢেলে বেজিংয়ের উপরে আরও চাপ বাড়িয়ে তুলেছে ওয়াশিংটন। এর তাতে ফলও মিলেছে। সরাসরি সংঘাতের পথে না হেঁটে এবার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসতে চাইছে শি জিনপিং প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: রাতের অন্ধকারে বুটের আওয়াজ! মায়ানমারে গণবিক্ষোভ আটকাতে নয়া পন্থা সেনার]
সম্প্রতি আমেরিকা-চিন সম্পর্ক নিয়ে একটি সেমিনারে বক্তব্য রাখেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেখানেই পরিচিত সংঘাতের সুরের বদলে তাঁর গলায় শোনা যায় আপসের আরজি। চিনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক দল ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আবেদন জানান চিনা বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, “চিনের কমিউনিস্ট পার্টি ও রাজনৈতিক কাঠামোর বিরুদ্ধে কুৎসা বন্ধ করুক আমেরিকা। হংকং, শিনজিয়াং ও তিব্বতের মতো ইস্যু হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকুক দেশটি। চিনা সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাইওয়ানের স্বাধীনতা নিয়ে যুক্তি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকুক ওয়াশিংটন।” তবে গতানুগতিক কূটনৈতিক তর্কের শেষে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী চিন বলেই বার্তা দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী ওয়াং। চিনা সরকারই সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’ সূত্রে খবর, চিনা নববর্ষ উপলক্ষে বাইডেন ও জিনপিংয়ের বার্তা দু’দেশের সম্পর্ক উন্নত করতে বড় পদক্ষেপ বলেই মত চিনা বিদেশমন্ত্রীর। বিশ্লেষকদর মতে, আমেরিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শুল্ক যুদ্ধ চললে ফল যে খুব একটা ভাল হবে না, তা মেনে নিয়েছে চিন। পাশাপাশি, ভারত-সহ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন মিত্র দেশের জোটও চিনাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। ফলে আপাতত আমেরিকার সঙ্গে আলোচনাই শ্রেয় বলে মনে করছে কমিউনিস্ট দেশটি।
সম্প্রতি চিনের সঙ্গে টক্কর আরও জোরদার হতে চলেছে বলে সাফ বার্তা দিয়েছিলেন বাইডেন। হাউসে এক অনুষ্ঠানে চিনকে রুখতে মিত্র দেশগুলির কাছে একসঙ্গে কাজ করার আবেদন জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাইওয়ান নিয়েও চিনকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। দিন তিনেক আগে তাইওয়ান সীমানার খুব কাছে ঢুকে পড়েছিল কয়েকটি চিনা ফাইটার জেট। কয়েকদিন আগে প্রায় এক ডজন ফাইটার জেট অতিক্রম করল তাইওয়ানের আকাশ সীমা। অবশ্য মূল ভূখণ্ডের আগে থেকেই ফিরে যায় যুদ্ধবিমানগুলি। তারপরই আমেরিকা জানায়, বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস থিওডর রুজভেল্ট সমুদ্রে যাতায়াতের স্বাধীনতা বজায় রাখতে দক্ষিণ চিন সাগরে প্রবেশ করেছিল। অর্থাৎ আমেরিকার তরফে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে প্রয়োজনে সামরিক সংঘাতে নামতে পিছপা হবে না তারা।