সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানের অর্থনৈতিক দুর্দশা মোচনে সাহায্য করবে চিন। এমনটাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চিনা প্রসিডেন্ট শি জিনপিং। বুধবার চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঋণের ভারে গলা পর্যন্ত ডুবে থাকা ইসলামাবাদকে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। এবার পাকিস্তানের কাছে চিন কার্যত ‘গৌরী সেন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।তবে বাংলার কিংবদন্তি দাতার মতো চিনের টাকা বিনা শর্তে পাওয়া যায় না। আবারও ফাঁদে পা দিচ্ছে পড়শি দেশটি।
মঙ্গলবার দু’দিনের চিন (China) সফরে যান পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। সূত্রের খবর, চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের (Xi Jinping) সঙ্গে বৈঠকে বসেন শরিফ। দুই দেশের বাণিজ্য ও বিভিন্ন কূটনৈতিক বিষয়ে কথা হয় বৈঠকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, আগেই চিনের কাছে প্রায় ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। ‘রি-পেমেন্ট’ বা টাকা ফেরত দেওয়ার মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও সেই টাকা এখনও শোধ করতে পারেনি ইসলামাবাদ। তার উপর আরও ঋণ চাইছেন শাহবাজ। ‘রি-পেমেন্টের’ মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে, গত জুন মাসে ভয়াবহ বন্যায় দেশটির প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। ফলে দেশটি কার্যত বেজিংয়ের হাতে বিক্রি হয়ে যাওয়ার জোগাড় বলেই মত বিশ্লেষকদের।
[আরও পড়ুন: ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে দেউলিয়া শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তান, এবার লাতিন আমেরিকার দিকে হাত বাড়াচ্ছে চিন]
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইতিহাস গড়ে তৃতীয়বারের জন্য চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তাঁকে ‘সত্যিকারের বন্ধু’ বলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পাকিস্তানের (Pakistan) প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। বলে রাখা ভাল, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান দাবি করেছিলেন, শ্রীলঙ্কার মতোই অবস্থা হতে চলেছে দেশের। গত মে মাসেই সৌদি আরব জানিয়েছিল, পুরনো ঋণ শোধ করতে অপারগ পাকিস্তানকে তার আর কোনও রকম অর্থসাহায্য করবে না তারা। এই পরিস্থিতিতে ঋণ শোধ করতে দেশীয় সম্পত্তি বিক্রির পদক্ষেপ ছাড়া কার্যত আর উপায় নেই পাকিস্তানের। তাই যে করে হোক পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চিনের দ্বারস্থ হয়েছে ইসলামাবাদ।
রতের বিরোধিতা সত্বেও চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (CPEC) প্রকল্পের অন্তর্গত পাক অধিকৃত কাশ্মীর-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে পরিকাঠামো নির্মাণ করছে চিন। তবে এই প্রকল্পের যে বিপুল খরচ তার ফলে ক্রমে বেজিংয়ের ঋণের বোঝায় কার্যত চাপা পড়েছে ইসলামাবাদ বলেই মত বিশ্লেষকদের। আর সেই আশঙ্কা যে অমূলক নয় তার প্রমাণও মিলেছে। গতবছর এক রিপোর্টে বলা হয়, চিন-পাক অর্থনৈতিক করিডর প্রকল্প থেকে বিপুল লাভ করে চলেছে চিন। লাভের অঙ্ক নিয়ে পাকিস্তানকে বোকা বানাচ্ছে তারা। পাকিস্তানের শীর্ষ আমলারা এ ব্যাপারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি অডিট রিপোর্ট পেশ করেছিলেন তৎককালীন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে। ২৭৮ পাতার ওই রিপোর্টের ছত্রে ছত্রে ছিল চিনের প্রতি বিষোদ্গার।