সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নেপালে (Nepal) চরমে রাজনৈতিক ডামাডোল। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির দুই প্রধান- কে পি শর্মা ওলি ও পুষ্পকমল দহল ওরফে প্রচণ্ডের সংঘাতে ভাঙনের মুখে দল। এহেন সময়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঠমান্ডুতে বিশেষ প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল চিন (China)। কিন্তু চারদিনের জোরদার চেষ্টা চালিয়েও কমিউনিস্ট শিবিরে শান্তি ফেরাতে পারলেন না তাঁরা। অবশেষে বুধবার খালি হাতেই কাঠমান্ডু থেকে দেশে ফেরার বিমান ধরতে বাধ্য হলেন চিনা দূতেরা।
[আরও পড়ুন: দীর্ঘ টানাপোড়েনের অবসান, ব্রিটিশ সংসদে পাশ ব্রেক্সিট পরবর্তী বাণিজ্য বিল]
দলীয় কোন্দলের জেরে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হতে পারে এই আশঙ্কায় গত ২০ ডিসেম্বর ২৭৫ আসনের নেপালের সংসদ ভঙ্গ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। তারপর থেকেই রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছে পুষ্পকমল দহল ও এনসিপি-র চেয়ারম্যান মাধবকুমার নেপালের অনুগামীরা। নেপালের সংবিধানে সংসদ ভঙ্গ করার কোনও বিধান না থাকায় সুপ্রিম কোর্টে বেশ কয়েকটি মামলাও চলছে ওলি বিরুদ্ধে। এহেন পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ এপ্রিল ও ১০ মে, দু’দফায় ভোট হওয়ার কথা পাহাড়ি দেশটিতে। সূত্রের খবর, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (এনসিপি)-র দুই গোষ্ঠীর সমঝোতা যেমন হয়নি, তেমনই ওলি-বিরোধী অন্য দলগুলিও চিনা প্রতিনিধিদের উপরোধে প্রচণ্ড-মাধব গোষ্ঠীকে সমর্থন দিয়ে বিকল্প সরকার গড়তে রাজি হয়নি। ফলে গরিষ্ঠ কোনও জোটের সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেননি চিনা প্রতিনিধিরা। তাছাড়া, দরকারে বাবুরাম ভট্টরাইয়ের জনতা সমাজবাদী পার্টি, এমনকি বাহাদুর দেউবার নেপালি কংগ্রেসের মতো অন্য বিরোধী দলের সমর্থন নিয়ে হলেও কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বেই নতুন সরকার গড়ার একটি প্রস্তাব দিয়েছিল বেজিং। কিন্তু বাবুরাম ও বাহাদুরদের দল এতে সাড়া দেয়নি।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ফেরত নেওয়ার জন্য ওলির কাছে আবেদন জানান চিনা দূতেরা। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দেন যে ওলিকে পরিধানমন্ত্রী পদে থাকতে দেবেন প্রচণ্ড ও মাধব। তবে প্রতিপক্ষের উপর তেমন আস্থা না থাকায় এই প্রস্তাব এককথায় উড়িয়ে দেন ওলি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ফের নির্বাচনই এই সমস্যার একমাত্র সমাধান। তারপর ওলি ও প্রচণ্ড শিবিরকে একসঙ্গে নির্বাচন লড়ার আবেদন জানিয়ে জনমতের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নেওয়ার আরজি জানান জিনপিংয়ের প্রতিনিধিরা। কিন্তু সেই প্রস্তাবও মানতে নারাজ ওলি। এদিকে, সুর কিছুটা নরম করলেও, সংসদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ফেরত না নিলে ওলির সঙ্গে কোনও সমঝোতা নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রচণ্ড শিবির। সব মিলিয়ে নেপালে ফের রাজনৈতিক সংকট চরম রূপ ধারণ করেছে।