অর্ণব আইচ: লোন অ্যাপের (Loan App) নামে নেপালে (Nepal) বসে কলকাতার বাসিন্দাদের টাকা হাতাচ্ছে চিনা জালিয়াতরা (Chinese Fraud)। তাদের সাহায্য করছে ভারতীয় সহযোগী, যারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দা। সম্প্রতি কয়েকটি জালিয়াতির তদন্ত শুরু করে লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। ইতিমধ্যে বিদেশ মন্ত্রকের সাহায্যে নেপাল সরকারের সঙ্গে যোগাযোগও করেছেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা। এইসঙ্গে কলকাতা পুলিশের অনুরোধে দেড়শোর উপর ভুয়ো চিনা লোন অ্যাপ বা ঋণ অ্যাপ মুছে ফেলেছে সার্চ ইঞ্জিন সংস্থা গুগল (Google)। কিন্তু তার পরও নতুন পদ্ধতি প্রয়োগ করে চিনা জালিয়াতরা প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
গত কয়েক মাসে ভুয়ো ঋণ অ্যাপ সংক্রান্ত অন্তত আটটি জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তারই ভিত্তিতে তদন্ত চালাচ্ছেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। অতি সহজে ঋণ দেওয়ার নাম করে কোনও মেসেজ বা লিংক পাঠানো হলে যাতে কেউ তাতে ক্লিক না করেন, বা সাড়া না দেন, কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে এমনই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত বছর প্রথমে উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) ও তার পর মালদহ ও বাংলাদেশের সীমন্তবর্তী এলাকা থেকে ধরা পড়ে একাধিক চিনা নাগরিক। তাদের জেরা করে ভুয়ো ঋণ অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় সঙ্গীদের বিষয়টি সামনে আসে। জানা যায়, চিনারাই এই লোন অ্যাপগুলি তৈরি করে। এর পর সারা দেশের পুলিশ সতর্ক হয়। ভুয়ো লোন অ্যাপগুলি মুছে ফেলার জন্য সার্চ ইঞ্জিন সংস্থাগুলিকে বলা হয়। কিন্তু পদ্ধতি পাল্টে চলেছে চিনা জালিয়াতরা।
[আরও পড়ুন: সিট গঠনের মাসখানেকের মধ্যে রসিকা জৈন হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার বধূর স্বামী]
পুলিশ জানিয়েছে, ইংরেজি ও হিন্দিতে বিশেষ সড়গড় না হওয়ায় চিনা জালিয়াতরা চিনের বদলে নেপালের কাঠমান্ডু সংলগ্ন এলাকায় খুলেছে বহু ভুয়ো কল সেন্টার। যে নেপালি তরুণ ও তরুণীরা হিন্দি ও ইংরেজি জানেন, তাঁদের দিয়ে চিনা জালিয়াতরা ফোন করাচ্ছে কলকাতায়। এ ছাড়াও ঋণ দেওয়ার নামে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া অথবা বেসরকারি ব্যাংকের নামে লিংক পাঠাচ্ছে তারা। কেউ ঋণ নিতে চেয়ে ক্লিক করে যোগাযোগ করলে তাঁর চাহিদার ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হচ্ছে। যদিও পুরো টাকার অঙ্ক ধরেই সাতদিন পর থেকেই চাওয়া হচ্ছে দৈনিক মোটা সুদ ও আসলের টাকা। কেউ টাকা ফেরত দিতে রাজি না হলেই তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মুখের ছবি তুলে ‘মর্ফ’ করে অশ্লীল ছবি আপলোড করছে চিনা জালিয়াতরা।
[আরও পড়ুন: মাদককাণ্ডে অভিযুক্ত পামেলা গোস্বামীর সঙ্গে একফ্রেমে দ্রৌপদী-শুভেন্দু, তুঙ্গে বিতর্ক]
সম্প্রতি অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ মাদুরাই (Madurai) সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চক্রের মাথাদের গ্রেপ্তার করেছে। আরও কয়েকজন পান্ডার সন্ধান চলছে। চক্রের কোনও মাথা এই রাজ্যে লুকিয়ে রয়েছে কি না, তাও জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।