সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সরষে, পোস্ত, নারকেল বাটা-সহযোগে তৈরি এই পাতুরি ভাত হোক বা পোলাও, সব ভোজের শো-স্টপার! সে আমিষ হোক বা নিরামিষ, পাতুরি প্রেম বাঙালি নতুন নয়। সেই টানেই বিয়েবাড়ি বা যে কোনও অনুষ্ঠানে গিয়ে পাতুরির সন্ধান করেন অনেকে। আমিষ খান না আবার অনেকে। আজ তাঁদের জন্যই রইল নিরামিষ কিছু পাতুরির রেসিপি।
পোস্ত পাতুরি
উপকরণ
আধ কাপ পোস্ত, ৪ চা চামচ সাদা তিল, ২ চা চামচ সাদা সর্ষে, আধ কাপ নারকেল কুড়ানো, স্বাদমত নুন-চিনি, স্বাদ, পরিমান মতো সর্ষের তেল, কলা পাতা, সুতো, কাঁচা লঙ্কা, ধনেপাতা কুচি।
প্রণালী
প্রথমে সবকিছু মিক্সারে রেখে সামান্য জল দিয়ে পেস্ট করে নিতে হবে। একই সাথে কাঁচা লঙ্কাও পেস্ট করে নেবেন। এবার পেস্ট একটি পাত্রে নিয়ে তাতে নুন, চিনি, তেল, ধনেপাতা কুচি দিয়ে মেখে নিন। এবার সেঁকে রাখা কলাপাতায় পোস্তর মিশ্রণ রেখে উপরে একটি লঙ্কা চেঁরা দিয়ে মুড়ে সুতো দিয়ে বাঁধুন। এবার তাওয়ায় তেল ব্রাশ করে ঢিমে আঁচে সবকটা পাতুরি রেখে উলটে পালটে ভেজে নিন। নামিয়ে নিয়ে পরিবেশনের আগে একটু কাঁচা সরষের তেল ছড়িয়ে দেবেন খালি উপর থেকে। আহা, অমৃত! এক চামচ দিয়েই অনেকটা খাওয়া যায়।
এঁচোড়ের পাতুরি
উপকরণ
এঁচোড় ৫০০ গ্রাম (সেদ্ধ করে বাটা), নারকেল বাটা ৫ টেবিল চামচ, পোস্ত বাটা ৩ টেবিল চামচ, সরষে বাটা ৫ টেবিল চামচ, কাঁচালঙ্কা বাটা ২ টেবিল চামচ, কাঁচালঙ্কা চেরা ৫টি,
হলুদ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, নুন ও চিনি স্বাদমতো, সরষের তেল ৫ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, কলাপাতা প্রয়োজন মতো।
প্রণালী
পরিষ্কার করে ডুমো ডুমো করে এঁচোড় কেটে নুন, হলুদ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। এ বার জল ঝরিয়ে এঁচোড়গুলি বেটে নিন। খুব মিহি করে বাটার প্রয়োজন নেই, একটু দানা থাকলেই ভাল। এ বার একটি পাত্রে এঁচোড় বাটা, নুন, চিনি, রসুন বাটা, হলুদ, লঙ্কা, পোস্ত বাটা, সর্ষে বাটা ও সরষের তেল একসঙ্গে মেখে নিন। কলাপাতা চৌকো করে কেটে গ্যাসে সেঁকে নিন। প্রতি কলাপাতায় মিশ্রণ রেখে তার উপর একটি করে কাঁচালঙ্কা রেখে ভাল করে মুড়ে নিন সুতো দিয়ে। এ বার পাতুরি স্টিমে বসান। মিনিট পনেরো পর নামিয়ে নিন। গরম গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন এঁচোড়ের পাতুরি।
মুসুর ডালের পাতুরি
উপকরণ
এক কাপ মুসুর ডাল, পাঁচটি কুচনো পেঁয়াজ, একটা গোটা রসুন কুচি, এক টেবিল চামচ রসুন বাটা, দুটি টমেটো কুচনো। স্বাদ অনুযায়ী কাঁচা লঙ্কার কুচি, কুচনো ধনেপাতা, পরিমাণ মতো লবন, হলুদ ও সর্ষের তেল।
প্রণালী
পাতুরিতে তেল কম লাগে। এক্ষেত্রেও তার কোনও ব্যতিক্রম নেই। শুধু বৃষ্টি মাথায় করে একটা ঝকঝকে কলাপাতা খুঁজে এনে ধুয়ে রাখুন। তারপর সোজা রান্নাঘরে। মুসুর ডালটা আধঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে মিক্সিতে পেস্ট করে নিন। শিলেও বেটে নিতে পারেন। এরপর বাটা ডাল কুচনো পেঁয়াজ, রসুন, লঙ্কা, ধনেপাতা, টমেটো, হলুদ, নুন, তেল ও বাটা রসুন দিয়ে ভাল করে মাখুন। মাখা হয়ে গেলে মিশ্রনটিকে মিনিট দশেক ঢেকে রেখে দিন। এরপর সংগ্রহ করে আনা কলাপাতাটিতে ভাল করে তেল মাখিয়ে নিন। তেল চকচকে কলাপাতায় ঢেকে রাখা মিশ্রনটি ঢেলে দিন। এরপর পাতার উপরে সমান করে দিন। কাজ সম্পূর্ণ হলে লো ফ্লেমে গ্যাস জ্বালিয়ে ফেলুন। তাওয়া বসিয়ে অপেক্ষা করুন। সামান্য তেতে উঠলেই তাওয়ায় বেশ কয়েকটি কলাপাতা পরপর পেতে দিন। এবার ডালের মিশ্রন সমেত কলাপাতা চাপিয়ে দিনে তার উপরে। তাওয়াটা অবশ্যই ঢেকে দেবেন। এরপর ওই লো ফ্লেমেই দশ মিনিট রান্না হতে দিন। তারপরেই মিশ্রন সমেত কলাপাতাটি উলটে ফের তাওয়ায় বসিয়ে দিন। ফের ঢেকে দিয়ে আরও তিন থেকে চার মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় পেরোলেই গ্যাস নিভিয়ে দিন। ঢাকনা সরিয়ে উপকরণ থেকে তুলে রাখা খানিকটা কুচনো ধনেপাতা ছড়িয়ে দিন। ফের কিছুক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখুন। তৈরি পোড়া কলাপাতার স্মোকি ফ্লেভারওয়ালা ডাল পাতুরি।