shono
Advertisement

গুঁড়িয়ে গিয়েছে চুংথাং, পর্যটকদের ‘স্বপ্নের শহর’এখন যেন ‘মৃত্যুপুরী’!

১৫-২০ ফুট উঁচু জলস্তর নিয়ে তিস্তা চুংথাং শহরকে দুমড়ে মুচড়ে দেয় তিস্তা।
Posted: 02:15 PM Oct 07, 2023Updated: 03:58 PM Oct 07, 2023

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: ছিল ক্যানভাসে আঁকা ছবির মতো ছোট্ট জনপদ। রাতারাতি লাচেন ও লাচুং নদীর সঙ্গমস্থলের সেই চুংথাং পনেরো থেকে কুড়ি ফুট বালি-পাথরের আস্তরণে তলিয়ে এখন যেন মৃত্যুপুরী! কেন এমনটা মনে হবে না?

Advertisement

উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার চিন সীমান্ত সংলগ্ন ওই জনপদের রাস্তা, ঘরবাড়ির নাম-নিশানা যে মুছে দিয়েছে মঙ্গলবার রাতের বিধ্বংসী হড়পা বান। যতদূর চোখ যাবে দেখে মনে হবে নতুন করে তিস্তার চর জেগেছে। কোথায় বালি-পাথর ফুঁড়ে উঁকি দিচ্ছে টিনের চালের অংশ বিশেষ। আবার কোথাও বাস অথবা ট্রাকের উপরের সামান্য অংশ। সেখান দিয়ে এখনও তিরতির করে বইছে জলের স্রোত। ওই বালি-পাথর টপকে কেউ এগিয়ে যাবে উপায় নেই। কারণ, এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে চোরাবালির মরণফাঁদ। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে শুক্রবার পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল অনেক চেষ্টা করেও সেখানে পৌঁছতে পারেনি। সিকিম প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গন জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চুংথাং শহর। সেখানে আশি শতাংশ পরিকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। বাকি অংশের বাসিন্দারা কেমন আছেন, কেউ জানে না।

[আরও পড়ুন: বাংলায় মমতার নেতৃত্বে লড়ুক প্রদেশ কংগ্রেস ও সিপিএম, রাহুল-খাড়গের কাছে আর্জি পওয়ারের]

হিমবাহ-প্রবাহিত লাচেন ও লাচুং নদী মিলিত এখানেই তিস্তা নদী তৈরি হয়েছে। দুই নদীর জল বাঁধ দিয়ে আটকে ২০১৫ সাল নাগাদ তিস্তা-৩ জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। এরপর থেকে চুংথাং হয়ে উঠেছিল উপদ্বীপ। সেটাই যেন কাল হয়েছে মঙ্গলবার রাতে। লোনাক হ্রদ ফেটে যে জলরাশি বালি-বোল্ডার নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল সেটা লাচেন ও লাচুং হয়ে চুংথাং তিস্তা বাঁধে প্রথম আঘাত করে। হড়পা বান এসেছে বুঝে বাঁধের লকগেট খুলতে গিয়েও জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কর্মীরা পারেননি। গেট খোলার আগেই ভেঙেচুরে যায় বাঁধের একাংশ।

টন টন পাথর-বালি-সহ পনেরো থেকে কুড়ি ফুট উঁচু জলস্তর নিয়ে তিস্তা চুংথাং শহরকে দুমড়ে মুচড়ে রাস্তা, সেতু, ঘরবাড়ি উড়িয়ে ঝঁপিয়ে পড়ে গ্যাংটকের দিকে। ঘটনায় হতচকিত সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং সংবাদমাধ্যমের কাছে চুংথাং বাঁধের মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানান, নিম্নমানের নির্মাণের জন্য ওই বাঁধের একাংশ ভেসেছে। শুধু মুখ্যমন্ত্রী কেন? মঙ্গন জেলার বিপন্ন বাসিন্দাদের একই অভিযোগ। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র স্থান চুংথাং রাতারাতি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে অচেনা হয়েছে। শোনা যায়, এখানে বৌদ্ধ ধর্মগুরু পদ্মসম্ভব ঘুরে বেড়াতেন। একটি পাথরের উপর তিনি বসেছিলেন। সেই স্মৃতি এখন তিস্তাগর্ভে।

[আরও পড়ুন: বন্যা বিধ্বস্ত সিকিমে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, জলপাইগুড়ির তিস্তা থেকে ফের উদ্ধার দেহ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement