স্টাফ রিপোর্টার: প্রায় ১৪০ বছর। বড় দীর্ঘ সময়। লম্বা সে সময়সরণি ধরে তিনি, বাংলা মঞ্চ জগতের মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী বিনোদিনী দাসী ফিরে এলেন তাঁর নিজ রঙ্গালয় গৃহে। বুধের মাঘী সন্ধ্যার আলো ঝলমল বিনোদিনী থিয়েটারে। বিনোদিনী থিয়েটার। 'বাংলার গ্যারিক' গিরিশ ঘোষের স্বপ্নপূরণের রঙ্গমঞ্চ। নাট্যগুরুর যে স্বপ্নপূরণে নিজেকে বিকিয়ে দিতে দ্বিধা করেননি বিনোদিনী। তারপরও সেই আত্মত্যাগের সম্মানটুকু না পেয়ে থিয়েটারকে বিদায় জানান মাত্র ২৩ বছর বয়সে।
বিনোদিনী চেয়েছিলেন বড় সামান্য! গিরিশ ঘোষের সারাজীবনের স্বপ্নকে সফল করতে ধনাঢ্য বণিক গুরমুখ রায়ের কাছে নিজেকে বিকিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে চেয়েছিলেন সে মঞ্চের নাম হোক তাঁর নামে। সেদিন গিরিশ ঘোষরা যা পারেননি, বঙ্গ রঙ্গমঞ্চের সম্রাজ্ঞীর সেই সাধ দেড়শো বছর পর পূর্ণ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্টার থিয়েটারের নামকরণ হয়েছে নটি বিনোদিনীর নামে।
এদিন নবনামাঙ্কিত বিনোদিনী থিয়েটারে ছিল রামকমল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত বহুচর্চিত ‘বিনোদিনী একটি নটীর উপাখ্যান’ ফিল্মের প্রিমিয়ার শো। সেই উপলক্ষে থিয়েটার ভবনে বাংলা রূপালি জগতের তারকাছটায়, ঢোল-কাঁসির বোল, হাসি ও করতালির শব্দব্রহ্মে ম্রিয়মাণ শোনাল গোটা মহানগরীকে।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম
কে নেই সে ভিড়ে? পরিচালক রামকমল, প্রযোজক প্রদীপ চক্রবর্তী, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, মীর আফসার আলি, রাহুল বোসের মতো ছবির অভিনেতারা। ছিলেন সুপারস্টার দেব, যিনি এই ছবির প্রযোজক-নিবেদক। এবং ছিলেন এ ছবির মূল আকর্ষণ, যাঁর অভিনয়কে ভর করে এই ছবি ইতিমধ্যেই আলোড়ন তুলেছে টলিপাড়ায়, সেই বিনোদিনী চরিত্রকে বাঙময় করে তোলা রুক্মিনী মৈত্র। ছিলেন সকন্যা শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়া, পরিচালক সুদেষ্ণা রায় ও অভিজিৎ গুহ, পরিচালক অতনু বোস, কন্যা শ্রেয়া পাণ্ডেকে নিয়ে বিধায়ক সুপ্তি পাণ্ডে। প্রিমিয়ার শো শুরুর আগে প্রথাগত আলাপচারিতা। সেখানে অনেকে অনেক কিছু বললেন। পাঁচবছর আগে এই ছবি নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরুর কথা বললেন রামকমল। মীরের কথায় বাংলা থিয়েটারের ফিল্মিকরণের প্রসঙ্গ। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, "আজকের দিনটা শুধু সিনেমা দেখা নয়, এ একটা ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা।"