টলিউডে পা দিয়েই সুপারহিট ইধিকা পাল। দেবের সঙ্গে জুটি বেঁধে 'খাদান' ব্লকবাস্টার। ছবি নিয়ে আড্ডায় 'কিশোরী'। শুনলেন শম্পালী মৌলিক।
'খাদান' তো ব্লকবাস্টার। সাফল্য কেমন উপভোগ করছেন?
ইধিকা : জাস্ট উপভোগ করা শুরু করেছি। ২০ তারিখ তো মুক্তি পেল 'খাদান'। কিন্তু এর আগে 'কিশোরী' গানটি যখন মুক্তি পেয়েছিল, তখন অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। ২ কোটি ক্রস করেছে গানটির ভিউ। এক কোটি আমরা করে ফেলেছিলাম ১০ দিনেই। এটা খুব বড় সাফল্য আমার কাছে। এত তাড়াতাড়ি এই গান জনপ্রিয় হবে আশা করিনি। এরপর যখন আমরা বেঙ্গল ট্যুর করলাম। প্রত্যেকটা স্টেজে গিয়ে গিয়ে মানুষ যেভাবে আমাদের ভালোবাসা দিয়েছিল। তা ভাবা যায় না। আমরা খাদান লেখা টিশার্ট পরে প্রচার করেছিলাম। আমি দেখেছি, কিছু মানুষ খাদান লেখা টিশার্ট পরেই এসেছিল আমাদের কাছে। সবার লাইন বাই লাইন গানটা মুখস্থ। এই ফিলিং জাস্ট বোঝাতে পারব না। দারুণ লেগেছিল।
কেরিয়ারের শুরুতে দেব এবং শাকিব খানের মতো দুই সুপারস্টারের সঙ্গে কাজ। কেমন অভিজ্ঞতা?
ইধিকা : এটা একেবারেই আমার কাছে আশীর্বাদের মতো। খাদানের কথাই যদি বলি, এই ছবি বেশ কয়েকটি কারণের জন্য আমার কাছে স্পেশাল। এক তো খাদান খুব বড় ক্যানভাসের ছবি, দ্বিতীয়ত এত বড়মাপের অভিনেতাদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা, তৃতীয়ত একজন সুপারস্টারের বিপরীতে কাজ করা, চতুর্থত, সবাই এই ছবিটার জন্য অপেক্ষা করেছিল, কেননা, এই ছবি তাঁদের সুপারস্টারের কামব্যাক। তার উপর খাদান আমার টলিউডের ডেবিউ ছবি। আমি মনে করি এর থেকে বেটার ডেবিউ হত না।
দেবের বিপরীতে নায়িকা। কী কী ফ্য়াক্টর কাজ করেছিল ছবির অফারটা পাওয়ার সময়?
ইধিকা : (হেসে ফেলে) এটা না আমার সঠিক জানা নেই। আগে ফোনে কথা হয়েছিল। তারপর প্রথমবার যখন দেবের অফিসে গিয়ে দেখা করি, সেদিন আমার দেবদার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান সাক্ষাৎ ছিল। সঙ্গে পরিচালক ছিলেন। তিনি বললেন, আমরা এরকম একটা ছবির কথা ভাবছি। সেটা শুনে আমি আমার কথা ভাবিনি, আমি আছি কিনা ছবিতে, কোন চরিত্রে আছি সেটাও ভাবিনি। আমি উচ্ছ্বসিত হয়ে দেবদাকে বললাম, ও তুমি আবার অ্যাকশন করবে, ডান্স করবে! আমার কাছে খুব বড় ব্য়াপার যে আমি এরকম একটা মাস ছবিতে সুযোগ পেয়েছি।
'খাদান'-এর পর কী জীবন পালটে গেল?
ইধিকা : খাদানের পর জীবন তো অবশ্যই বদলেছে। কিন্তু কতটা বদলেছে, সেটা বোঝার জন্য আমার কয়েকটা দিন একটু সময় লাগবে। এখনও পর্যন্ত আমরা যা প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি, মানুষ এত ভালোবাসছে। এই তো সেদিন আমার বন্ধু বলছিল, নবীনা সিনেমা হলের সামনে মারাত্মক ভিড়, ঢাকঢোল বাজছে যেন মনে হচ্ছে সিনেমা মুক্তি নয়, দুর্গাপুজো হচ্ছে।
'খাদান' ছবির লুক অ্যান্ড ফিল অনেকটাই দক্ষিণী ছবির মতো। বিশেষ করে কেজিএফ মনে করায়। এরকম ছবি দিয়েই কী বাংলায় ফাইটব্যাক করতে হবে? কী মনে হয়?
ইধিকা : আমার মনে হয়, আমরা এতদিন ভাবতাম, আমাদের মাস অডিয়েন্স নেই। যাঁরা আমাদের মাস ছবি গ্রহণ করবে। তবে খাদানের ক্ষেত্রে দর্শকরা একেবারেই আমাদের ভাবনাকে ভুল প্রমাণ করেছে। তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছে, এতদিন ভালো মাস ছবির অপেক্ষায় ছিলেন। আমার মনে হয়, দর্শকদের আমাদের উপর ভরসা বেড়েছে, তাঁরা মনে করছে খাদান সেইরকম একটি ছবি, যে মাস ছবিটা আবার দেখতে চেয়েছিলাম, যা বার বার দেখতে যাওয়ার মতো।
কোলিয়ারিতে শুটিং করার অভিজ্ঞতা কেমন?
ইধিকা : আমরা তো একদম খাদানে শুট করেছি। তাও আমরা একটু গরম কম পেয়েছিলাম। তাছাড়াও খাদান অঞ্চলে নানা নিষেধাজ্ঞা থাকে। কখনও ব্লাস্ট হচ্ছে, প্রচণ্ড ধূলো। তার মধ্যে কাজ করাটা একটু অসুবিধাজনক ছিল।
এর পরের কাজগুলো সম্পর্কে যদি কিছু বলেন...
ইধিকা : আরও কিছু দিন খাদানের সাফল্যটা উপভোগ করতে চাই । তারপর বাদ বাকি কাজ। এছাড়া, শাকিব খানের সঙ্গে বাংলাদেশের বরবাদ ছবিতে কাজ করছি। কিছুটা শুটিং মুম্বইতে হয়েছে। এখন শুট বন্ধ রয়েছে।
খাদান দেখে মা-বাবার কেমন প্রতিক্রিয়া?
ইধিকা : ওরা তো দারুণ খুশি। টিকিট কেটে দেখতে গিয়েছিল। কিন্তু হলের ভিতর এত নাচানাচি, এত চিৎকার। মা নাকি ঠিক করে দেখতেই পারেনি। তবে মা কিন্তু এসব দেখে খুবই আনন্দ পেয়েছে। মায়ের মনে হয়েছে মানুষ আরও নাচুক, আরও আনন্দ করুক।
দেবের সঙ্গে তোমার জুটি সুপারহিট। আবার কাজ করতে চান?
ইধিকা : অবশ্যই! দেব দারুণ অভিনেতা, দারুণ সহঅভিনেতা, দারুণ প্রযোজক, ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর। আমাকে তো দেব ডিরেক্টও করেছে। আমি খুব লাকি যে একসঙ্গে দুটো ডিরেক্টারকে পেয়েছি।
টেলিপর্দায় ফেরার ইচ্ছে রয়েছে?
ইধিকা : আপাতত নয়, মানুষ যদি চায় তাহলে আরও কিছুদিন বড়পর্দায় থাকতে চাই।
'কিশোরী' প্রেমে কজন পড়ল? আর' কিশোরী' ইধিকা কার প্রেমে রয়েছে?
ইধিকা : আমিও জানতে চাই কিশোরীর প্রেমে কজন! তবে হ্য়াঁ, গানটার পর অনেকের মেসেজ পেয়েছি। আর আমি? আপাতত খাদানের প্রেমেই রয়েছি।