সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠাকুরপুকুর দুর্ঘটনার তিন রাত পার। রবিবার সংশ্লিষ্ট এলাকার বাজারে আচমকাই ঝড়ের গতিতে ঢুকে পড়ে মদ্যপ পরিচালকের গাড়ি। কমপক্ষে পাঁচ-ছয় জনকে ধাক্কা মেরে এক ব্যক্তিকে পিষে দেয় ঘাতক গাড়িটি। ইতিমধ্যেই মদ্যপ পরিচালক ভিক্টো ওরফে সিদ্ধান্ত দাস জেল হেফাজতে। ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেননি অভিনেত্রী ঋ। জামিন পেয়েছেন শ্রিয়া বসু। স্যান্ডি সাহা এবং আরিয়ান ভৌমিকরা যে যাঁর মতো ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। নিরীহ ব্যক্তির মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে মানুষ। সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে এবার টলিপাড়ার 'মৌনব্রত' নিয়ে প্রশ্ন ছুড়লেন কুণাল ঘোষ।

শনিবার রাতে শহরের এক পানশালায় পার্টিতে মেতেছিলেন সিরিয়ালের পরিচালক ভিক্টো, এক নামী চ্যানেলের কার্যনির্বাহী প্রযোজক শ্রিয়া বসু, অভিনেতা আরিয়ান ভৌমিক, ঋতুপর্ণা সেন, স্যান্ডি সাহারা। পানশালা থেকে ফেরার পথে আরিয়ানের বাড়িতে আড্ডার আসর বসে। সেখান থেকে ফেরার পথেই মদ্যপ পরিচালকের গতির বলি এক ব্যক্তি। জানা যায়, সিদ্ধান্তের গাড়ির ধাক্কায় ছ’জন জখম হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। রবিবার ঠাকুরপুকুরের ভরা বাজারে এহেন দুর্ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে নাগরিক হিসেবে তাঁদের নৈতিকবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সেই রাতের ঘটনায় যদিও সঙ্গী অভিনেতারা নিজেদের মতো করে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। রেহাই পেয়েছেন কার্যনির্বাহী প্রযোজকও। তবে ঘটনায় তিন দিনের জেল হেফাজত হয়েছে পরিচালক সিদ্ধান্তের। সেপ্রসঙ্গ টেনেই কুণাল ঘোষের প্রশ্ন, "টলিউডের বিপ্লবীরা 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' বলে মোমবাতি হাতে নামছেন না কেন এবার?"
বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল নেতা লিখেছেন, "ঠাকুরপুকুরে মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালিয়ে মানুষ মারা জানোয়ারগুলো এখনও সবাই গ্রেপ্তার নয় কেন? যে চালাচ্ছিল, যে কটা মদ্যপ অসভ্য গাড়িতে ছিল, সবকটার গ্রেপ্তারি চাই। সাধারণ দুর্ঘটনা আর এই মাতাল হয়ে হুল্লোড় করে মানুষ মারা এক নয়।" এরপরই গতবছর আগস্ট মাসের আর জি কর প্রসঙ্গ টেনে টলিপাড়ার 'প্রতিবাদী সেলেব'দের বিঁধে কুণালের প্রশ্ন, "টলিউডের বিপ্লবীরা 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' বলে মোমবাতি হাতে নামছেন না কেন? আপনাদের ইন্ডাস্ট্রির মদ্যপ, খুনী বলে? সেই বিপ্লবী দাদা, দিদিমণিদের বিপ্লবী নাচ-গান কোথায় গেল?"
প্রসঙ্গত, চব্বিশ সালের 'অভিশপ্ত' আগস্টে আর জি কর ইস্যুতে তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। টলিপাড়ার একাধিক তারকামুখকে পথে নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন। 'রাত দখল' করে নাচ-গানের মাধ্যমেও তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর প্রতিবাদ করতে দেখা যায় তাঁদের। মাস খানেক আগের সেই বিভীষিকাময় প্রসঙ্গ টেনেই এবার টলিউডের কাছে কুণাল ঘোষ প্রশ্ন রাখলেন, ইন্ডাস্ট্রির সদস্য বলেই কি এবার মৌনব্রত রেখেছেন তারকারা? যদিও সেলেবমহলের একাংশ প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। কেউ অভিযুক্ত পরিচালক-সহ তাঁর মদ্যপ সঙ্গীদের কার্ড বাতিল করে কাজ কেড়ে নেওয়ার দাবি তুলেছেন, তো কেউ বা আবার নাগরিকত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ভিক্টো, ঋ, স্যান্ডি এবং আরিয়ানকে। এককথায় ঠাকুরপুকুর কাণ্ডে সরগরম নেটপাড়া।