সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী হুমাইরা আসগর আলির রহস্যজনক মৃত্যুতে তোলপাড় পাকিস্তান! সেদেশের প্রতিরক্ষা দপ্তরের আবাসন থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর দেহ। হুমাইরার মৃত্যুর পরই তাঁর স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের খোঁজ শুরু করেছিল পুলিশ। শেষমেশ শত চেষ্টার পর অভিনেত্রীর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় পুলিশের। কিন্তু মেয়ের মৃত্য়ুর খবর শুনে এমন প্রতিক্রিয়া দেন তিনি, যা প্রকাশ্যে আসতেই আরও একবার হুমাইরার মৃত্যুর কারণ নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, হুমাইরা আসগর আলির বাবা তাঁর মেয়ের মরদেহ নিতে অস্বীকার করেছেন। শুধু তাই নয়, পেশায় প্রাক্তন সেনা চিকিৎসক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, "আমরা অনেক আগেই ওর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করে দিয়েছি। হুমাইরার দেহ নিয়ে আপনাদের যা মনে হয়, তাই করুন। আমাদের কিছু করার নেই। আমরা ওর দেহ গ্রহণ করব না।" এদিকে পাকিস্তানি অভিনেত্রীর ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও নাকি সেই একই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, হুমাইরার দেহ নিয়মমাফিক কবরস্থ করার জন্য তাঁর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল পুলিশ। কিন্তু পরিবারের সদস্যের তরফে এহেন প্রতিক্রিয়ায় স্তম্ভিত তাঁরাও। এবার হুমাইরার মৃতদেহ কার হাতে তুলে দেওয়া হবে? কিংবা তাঁর রক্তের সম্পর্কের কে শেষকৃত্য পালন করবে? তা নিয়ে ধন্দে পড়েছে পাক পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অন্তত দু' সপ্তাহ আগে হুমাইরা আসগর আলির মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, করাচির প্রতিরক্ষা দপ্তরের আবাসনের একটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে হুমাইরার দেহ। ওই ৩২ বছর বয়সি মডেল-অভিনেত্রী আবাসনের ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন বলে জানা গিয়েছে। পাক মুলুকের পুলিশ আধিকারিক সইদ আসাদ সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, হুমাইরা আসগর আলির পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এই রহস্যমৃত্যুর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ভাড়া বকেয়া থাকায় অবিলম্বে হুমাইরাকে ওই সরকারি আবাসনের ফ্ল্যাট ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল। তবে নায়িকার তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাননি ফ্ল্যাটের মালিক। এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। শেষমেশ মঙ্গলবার দুপুর ৩টে ১৫ নাগাদ ওই ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে পুলিশ পচা গন্ধ পায়। পরে দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটে ঢুকতেই দেখেন গন্ধ আরও তীব্র। এরপরই হুমাইরা আসগর আলির পচাগলা দেহ করেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। অতঃপর প্রাথমিকভাবে বাইরে থেকে ফ্ল্যাটে ঢুকে কারও খুন করার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা বহাল। ইতিমধ্যেই মডেল-অভিনেত্রীর দেব ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। তদন্তে নেমেছে ফরেনসিক দলও। জানা গেল, ওই ফ্ল্যাটে একাই থাকতেন হুমাইরা আসগর আলি। চলতি বছরের শুরু থেকেই মাসিক ভাড়া দেওয়া বন্ধ করেছিলেন তিনি।
