সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: 'ওহ উস্তাদ...', জাকির হুসেনের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সঙ্গীতকুল। রবিবারই গুরুতর অসুস্থ হয়ে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন উস্তাদ। জানা গিয়েছে, হৃদযন্ত্রের সমস্যার জন্যই শিল্পীর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়েছিল। পরিবারের তরফেও তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে প্রার্থনার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। ৭৩ বছর বয়সে চিরতরে পরলোকের উদ্দেশে রওনা হলেন উস্তাদ জাকির হুসেন।
রবিবার শিল্পী রাকেশ চৌরাশিয়া সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছিলেন, "ওঁর শারীরিক পরিস্থিতি খুব একটা ভালো নয়। বর্তমানে আইসিইউতে রয়েছে। আমরা সকলেই খুব উদ্বিগ্ন।" জাকির হুসেনের ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, "বর্ষীয়ান শিল্পীর রক্তচ্চাপের সমস্যা শুরু হয়েছিল। সেই জন্যই তড়িঘড়ি সান ফ্রান্সিসকোর এক হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।"
এদিন একটি বিবৃতিতে শিল্পীর পরিবারের তরফে জানানো হয়, "তবলাবাদক, সঙ্গীতজ্ঞ, প্রাক্তন অভিনেতা তথা উস্তাদ আল্লা রাখার পুত্র উস্তাদ জ়াকির হুসেন অসুস্থ। শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় গুরুতর অবস্থায় তাঁকে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অনুরোধ করছি, তাঁর দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করুন।" সেই সময় থেকেই উদ্বেগের কালমেঘ ঘনিয়ে আসে ভারতীয় সঙ্গীতকুলের উপর।
মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তবলাবাদক হিসেবে সফর শুরু করেন জাকির হুসেন। মাত্র সাত বছর বয়সেই মঞ্চে একক অনুষ্ঠান করে তাক লাগানোর রেকর্ডও রয়েছে তাঁর। ভূষিত হয়েছেন পদ্ম সম্মানেও। পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ তিনটিই রয়েছে উস্তাদের ঝুলিতে। প্রসঙ্গত, চলতি বছর গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছেন জাকির হুসেন। বেস্ট গ্লোবাল মিউজিক অ্যালবাম হিসেবে ‘শক্তি’ ব্যান্ডের গানের অ্যালবাম ‘দিস মোমেন্ট’ পুরস্কার পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যান্ডের মুখ্য কণ্ঠশিল্পী শঙ্কর মহাদেবন। এবং তবলাবাদক জাকির হুসেন। তাঁদের হাত ধরেই ২০২৪ সালে ভারতে গ্র্যামি আসে।
উস্তাদ জাকির হুসেনের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, "উস্তাদ জাকির হুসেনের অকাল মৃত্যুতে গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি ছিলেন খ্যাতনামা এবং সর্বকালের শ্রেষ্ঠতম তবলা বাদকদের একজন। দেশের এবং গোটা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ ভক্তদের জন্য এটা বিরাট ক্ষতি। আমি মহান শিল্পীর পরিবার, বন্ধু এবং অনুরাগীদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।"
কিংবদন্তি শিল্পীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী প্রমুখ।