বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: বামপন্থী ছাত্র ও যুব সংগঠনের নবান্ন (Nabanna) অভিযানের শুরুতেই ধুন্ধুমার। পুলিশের কড়া নজরদারি এড়িয়ে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতেই আচমকা একেবারে নবান্নের সামনে চলে আসেন সিপিএম বিধায়ক তথা বাম ছাত্র নেতা ইব্রাহিম আলি। সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন। তাঁরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয়ে তাঁদের আটকান। ইব্রাহিম-সহ ৫ জনকে টেনেহিঁচড়ে পুলিশের ভ্যানে তোলা হয়। তখনও উঁচু গলায় স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা। এ নিয়ে দিনের শুরুতে নবান্ন অভিযান নিয়ে অশান্তি ছড়াল। এরপর এই কর্মসূচিতে উত্তাপ যে আরও বাড়বে, তা বলাই বাহুল্য।
শূন্যপদে নিয়োগ, সকলের জন্য খাদ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষার অধিকার-সহ একগুচ্ছ দাবিতে বৃহস্পতিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল বাম ছাত্র-যুব সংগঠন। এসএফআই (SFI), ছাত্র ফেডারেশন, ডিওয়াইএফআই (DYFI)-সহ মোট ৮ বামপন্থী ছাত্র ও যুব সংগঠনের সঙ্গে এই কর্মসূচিতে শামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে কংগ্রেসের ছাত্র, যুব সংগঠনকেও। সবমিলিয়ে ১০ টি সংগঠনের ডাকে এদিন নবান্ন অভিযানে নেমেছে বাম ও কংগ্রেস কর্মীরা। চারপাশ থেকে মিছিল জমায়েত হয়ে দুপুর ১টা নাগাদ নবান্নের দিকে যাওয়ার কথা। যদিও অভিযানের অনুমতি মেলেনি পুলিশের তরফে। বলা হয়েছে, ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল যেতে পারে। কিন্তু তা মানতে নারাজ আন্দোলনকারীরা। তাঁদের সাফ হুঁশিয়ারি, নবান্ন অভিযান তাঁরা করবেনই। পুলিশ প্রতিরোধ করলে পালটা প্রতিরোধও হবে।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে রাস্তার ধারে উদ্ধার গৃহবধূর রক্তাক্ত দেহ, বেহালার ঘটনায় ঘনীভূত রহস্য]
সেইমতো অভিযান চালিয়ে কিন্তু দিনের শুরুতে প্রথম ধাক্কাটা দিলেন বাম ছাত্রনেতা তথা পাঁশকুড়ার সিপিএম বিধায়ক ইব্রাহিম আলি। তিনি আচমকা নবান্নের সামনে হাজির হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিদায় ঘটে গিয়েছে, এই বার্তা দিয়ে স্লোগান তোলেন। সেখান থেকেই আটক করা হয় তাঁকে। তারপর টেনেহিঁচড়ে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানে। একইভাবে আটক করা হয়েছে আরও ৫ জনকে।
[আরও পড়ুন: হাওড়া স্টেশনে ধৃত ২ পাচারকারী, উদ্ধার ২৪ লক্ষ টাকার রুপোর বাট]
এরপর বেলা বাড়তে থাকায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হতে থাকে। ধর্মতলা চত্বর থেকে প্রায় চার হাজার সদস্য নবান্নের দিকে এগোতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। ব্যারিকেড ভেঙে এগোতে চান বাম ছাত্র,যুবরা। প্রথম জলকামান, টিয়ার গ্যাস ছুঁড়ে তাঁদের রোখার চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তাতেও আন্দোলনকারীরা দমে যাননি। এরপর পুলিশ নির্বিচার লাঠিচার্জ করলে অনেকে আহত হন, অসুস্থ হয়ে পড়েন কেউ কেউ। গুরুতর জখমদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও, তা অমান্য করে সিধু-কানু-ডহরে ঢুকে পড়েন কয়েকজন ছাত্র ও যুব। আন্দোলনকারীদের শক্তি দেখে কার্যত বিভ্রান্ত পুলিশও।