সুমন করাতি, হুগলি: ফের প্রকাশ্যে বিজেপির (BJP) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বৈঠকে বিজেপি নেতাকর্মীদের চিৎকার-চেঁচামেচি, হাতাহাতি আর অশ্লীল ভাষার ব্যবহারে বিরক্ত স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসনের কাছে নালিশ ঠোকার ভাবনাচিন্তাও করছেন তাঁরা। এমনকী, বাড়ির মালিকও বৈঠকের জন্য ভবিষ্যতে বাড়ি দেবেন না বলছেন। ঘটনাটি ঘটেছে কোন্নগর মাস্টারপাড়া এলাকায়।
হুগলি জেলার কোন্নগর মাস্টারপাড়া এলাকায় বিজেপির বৈঠকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে। কথা কাটাকাটি, অশ্লীল ভাষা থেকে হাতাহাতি বাদ যায়নি কিছুই। এই এলাকার বিজেপি সমর্থক শিখা ভট্টাচার্যের বাড়ির একতলায় প্রধানমন্ত্রী জন ঔষধি কেন্দ্র। আর উপরের ছাদেই হয় বিজেপির বৈঠক। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি থেকে অন্যান্য নেতা-কর্মীরা। আর সেই বৈঠকে ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বাড়ির মালিক শিখা ভট্টাচার্য। তিনি জানান, তাঁর বাড়ির ছাদে বৈঠক করার জন্য অনুমতি চায় বিজেপি। তাঁদের বৈঠকে করার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু বৈঠক চলাকালীন বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে শুরু হয় বচসা, তারপর হাতাহাতি বেঁধে যায়। এই বচসা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ওই বাড়ির সামনে ভিড় জমান।
[আরও পড়ুন: বড়জোড়ার কারখানায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা, ফার্নেস বিস্ফোরণে গুরুতর জখম কমপক্ষে ১৫ শ্রমিক]
এই ঘটনার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা শিখাদেবীর কাছে অভিযোগ জানায় যে এই ঘটনায় এলাকার শান্তি নষ্ট হচ্ছে। এই ঘটনার পর শিখাদেবী বলেছেন, “আর কোনওদিন আমার বাড়িতে বিজেপির বৈঠক করতে দেব না। এই দল ক্ষমতায় না এসেই এই অবস্থা আর ক্ষমতায় এলে কী করবে!” এই ঘটনায় বাড়ির নিচের প্রধানমন্ত্রী জনঔষধি দোকানের কর্মচারী জানিয়েছেন, যখন বৈঠক চলছিল, তখন তাঁরা দোকানেই ছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, “বৈঠকের মাঝেই শুরু হয় নিজেদের মধ্যে ঝামেলা। সেখান থেকে হাতাহাতি। ভিড় জমে যায় বাড়ির নিচে।”
স্থানীয় বাসিন্দা স্মরজিৎ ভৌমিক অভিযোগ করেন, “ওই বাড়িতে প্রায় বিজেপির মিটিং হয়, কিন্তু কাল বৈঠকে ঝামেলা এমন শুরু হয় যে তারা এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এই ঘটনা প্রশাসনকে জানাব।” এই ঘটনা নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ চক্রবর্তী বলেন, “বিজেপির নিজেদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সবসময় ছিল। এবার সেটা মানুষের সামনে আসছে। মানুষ দেখুক এই দল কেমন।” তাঁর কাছে আগেও এবিষয়ে এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছিল। এবার প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হবে বলে জানিয়েছেন কাউন্সিলর।