shono
Advertisement

দফায় দফায় উত্তপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়! রাম-বাম দ্বন্দ্বে নাস্তানাবুদ পুলিশও

রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান ক্য়াম্পাসে সম্প্রচার করার কথা থাকলেও বাম ছাত্রদের বাধায় তা হয়নি।
Posted: 07:58 PM Jan 22, 2024Updated: 08:58 PM Jan 22, 2024

রমেন দাস: সকালে ‘রাম’, বিকালে বাম! সোমবার রামমন্দির উদ্বোধনের দিন দ্বিতীয় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় (Jadavpur University)। অযোধ্যার রামমন্দির (Ram Mandir Inauguration) আবহে দিনভর উত্তপ্ত রইল রাজ্যের অন্যতম নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সোমবার সকালে রামমন্দির উদ্বোধনের লাইভ স্ট্রিমিং দেখানোকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ক্যাম্পাসের গ্রিন জোনের কাছে হাতাহাতিতে জড়ান হিন্দুত্ববাদী এবং বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। পরস্পরের বিরুদ্ধে ওঠে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের উত্তপ্ত হয় বিশ্ববিদ্যালয়।

Advertisement

মিছিলে বাধা পেয়ে উত্তেজিত পড়ুয়ারা নামলেন বিক্ষোভে। ছবি: শুভজিৎ মুখোপাধ্যায়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩ নম্বর গেটের কাছে জমায়েত হন একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের একটা বড় অংশ। শুরু হয় মিছিল। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে বিজেপি, এবিভিপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ করা হয়, রামমন্দিরের নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে বিজেপি, আরএসএস। অভিযোগ, ক্যাম্পাস থেকে মিছিল শুরু হতেই বাধা দেয় পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা এবং নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে তাঁদের বাধা দেন পুলিশ আধিকারিকরা। দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ নম্বর গেটের কাছে পুলিশের বাধার পর আরও উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। ছাত্রদের একাংশের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ায় পুলিশ।

[আরও পড়ুন: অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনে মোদি, আরেক মন্দিরে ঢুকতে না পেরে রাস্তায় বসে রাহুল]

বচসার পরেও ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যান মিছিলকারীরা। ফের বাড়ে উত্তেজনা। ছাত্রদের আটকাতে সক্রিয় হয় পুলিশ। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, পুলিশের হাতে হেনস্তা হয়েছেন মিছিলে অংশ নেওয়া ছাত্রদের কেউ কেউ। এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকুরিয়ার (Dhakuria) দিকে এগোয় মিছিল। এআইডিএসও, এআইএসএফ, ডিএসএফের মতো একাধিক ছাত্র সংগঠনের ওই মিছিল ফের আটকায় পুলিশ। এর পর ছাত্ররা যাদবপুর থানার আগে থেকে প্রতিবাদ মিছিলের রুট পরিবর্তন করেন বলে দাবি।

[আরও পড়ুন: কাশ্মীরে বিক্রি করেছিল স্বামী! ২৪ বছর পর বাড়ি ফিরে সটান থানায় মহিলা]

অন্যদিকে, বিকালে প্রসাদ বিতরণ এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের কর্মসূচি করেনি এবিভিপি। দাবি, সুলেখা মোড় পর্যন্ত ওই সংগঠনের জমায়েত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসতে পারেননি তাঁরা। দাবি, সোমবার সকালের উত্তপ্ত পরিস্থিতির পর ফের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে ছাত্রদের নিষেধ করা হয়। তা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়েই ফের অল স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ছাত্রদের একাংশ। সোমবার দুপুরের ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, হিন্দুত্ববাদী ছাত্র সংগঠনকে সর্বশক্তি দিয়ে আটকে দেওয়ার। মিছিলের মাধ্যমে প্রতিবাদের কথাও বলা হয় ওই বৈঠকে।

সূত্রের দাবি, ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত এবং পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এদিন মিছিল করেন পড়ুয়ার। যাঁদের দাবি ছিল, রামের নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে এবিভিপির দাবি, বারবার নিজেরা একাধিক কর্মসূচি করলেও রামের নাম শুনলেই গা জ্বলে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর। আর সেই গাত্রদাহ থেকেই এই পরিস্থিতি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের দাবি, কোনও পক্ষকেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনও কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া হয়নি। সব ক্ষেত্রেই যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সবটাই অনভিপ্রেত বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের একাংশ। উল্লেখ্য, ২০২৩ এর আগস্ট মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন হস্টেলে নবাগত ছাত্রের মৃত্যুর পরেও দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় বিশ্ববিদ্যালয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement