সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বলা হয়, রাজনীতিতে স্থায়ী বন্ধু বা স্থায়ী শত্রু বলে কিছু হয় না। বাংলার ভোটের আগে পুরনো সেই প্রবাদই যেন সত্যি হচ্ছে। মাত্র বছর দেড়েক আগে ব্রিগেড সমাবেশে যে হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে উৎখাত করার ডাক দিয়েছিলেন, তিনিই কিনা এবার রাজ্যের নির্বাচনে মমতার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন। তাও একটা বা দুটো আসনে নয়, বৃহস্পতিবার রাজ্যে এসে মোট ৪০টি আদিবাসী অধ্যুষিত আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, পরোক্ষে এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে তোপও দেগেছেন তিনি। যা একেবারেই ভালভাবে নেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোরেনকে সরাসরিই তোপ দেগেছেন তিনি। মমতার স্পষ্ট বার্তা, “আগে ঝাড়খণ্ড সামলাও। আমি তো ঝাড়খণ্ডের বাঙালি ভোট চাইতে যাই না।”
গতকাল ঝাড়গ্রামের জামদা সার্কাস ময়দানে একটি জনসভা করেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (JMM) সভাপতি তথা ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকেই তিনি ঘোষণা করেন, বিধানসভা ভোটে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের ৪০টি আসনে লড়বে তাঁর দল। জানিয়ে দেন,”বাংলার আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে জেএমএম লড়াই করবে। আদিবাসীদের এখন চাক্কিতে পেষা হচ্ছে। নতুন নতুন আইন তৈরি হচ্ছে। আমি বারেবারে এই বাংলায় আসব। আদিবাসীদের অধিকার রক্ষার জন্য সংবিধানে উল্লিখিত পঞ্চম তফসিল তৈরি করতে হবে, এই এলাকায় আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য আলাদা কেন্দ্রীয় পর্ষদ গড়তে হবে।”
[আরও পড়ুন: নীতীশ কুমারের সঙ্গে দেখা করলেন AIMIM বিধায়করা, তুঙ্গে দলবদলের জল্পনা!]
ঝাড়গ্রামে হেমন্তের সভার কিছু পরেই কলকাতায় হিন্দিভাষীদের সঙ্গে বৈঠকে তাঁকে তোপ দাগেন তৃণমূলনেত্রী। বলে দেন, “আমার খারাপ লেগেছে।” মমতার কথায়,”যখন তোমার পাশে কেউ ছিল না, তখন আমি ছিলাম। পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলাম। শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আর এখন বাংলায় এসে ভোট চাইছ?” তৃণমূলনেত্রীর তোপ,”আমি কি ঝাড়খণ্ডে গিয়ে বাঙালি ভোট চাই? আগে ঝাড়খণ্ড সামলাও।” আসলে, লোকসভা নির্বাচনে ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন জেলাগুলি তথা জঙ্গলমহলে এমনিতেই খারাপ ফলাফল করেছে তৃণমূল (TMC)। বিধানসভার আগে এই এলাকায় ফের আদিবাসীদের মন পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসকদল। এরই মধ্যে যদি হেমন্ত সোরেনের দল এসে বিজেপি বিরোধী ভোটে ভাগ বসায়, সেটা তৃণমূলের জন্য মোটেই সুখকর হবে না। সম্ভবত সেকারণেই হেমন্তকে আগেভাগে একপ্রকার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন মমতা।