নিরুফা খাতুন: তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। বছর গড়াতে না গড়াতেই গেরুয়া শিবির থেকেও ইস্তফা দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বর্তমানে তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় নাকি নিষ্ক্রিয়, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে তারই মাঝে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে ‘প্রিয়’ কাননের নাম। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবং জোকা-তারাতলা মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাওড়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে কলকাতার বর্তমান মেয়রের সঙ্গে প্রাক্তন মেয়রের নামও উচ্চারণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবং জোকা-তারাতলা মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনের মাত্র কয়েকঘণ্টা আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মাতৃবিয়োগ হয়। তাই ভারচুয়ালি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। সে কারণে অনুষ্ঠানের শুরুতে শোকপ্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করা পাঁচটির মধ্যে চারটি প্রকল্পই তাঁর।
মমতা মনে করিয়ে দেন প্রায় ১২ বছর আগে ২০১০ সালে রেলমন্ত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়কার রাষ্ট্রপতি প্রতিভা প্যাটেলের উপস্থিতিতে জোকা-তারাতলা মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছিল। আর সে প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায় উঠে আসে তাঁর ‘প্রিয়’ কাননের নাম। জোকা-তারাতলা মেট্রোর জমির সংস্থানে কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা ভোলেননি মমতা। তাঁকে জানান ধন্যবাদও। তিনি আরও জানান, পরবর্তীকালে কলকাতার বর্তমান মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে ওঠেন। এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে ধন্যবাদ জানানোয় আপ্লুত শোভন ও বৈশাখী।
[আরও পড়ুন: রামপুরহাটে ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেসের স্টপেজ দাবি বিকাশরঞ্জনের, চিঠি রেলমন্ত্রীকে]
উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সাল থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখীকে নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। শোভন এবং রত্নার ব্যক্তিগত দ্বৈরথ প্রকাশ্যে আসে। সূত্রের খবর, সেই সময় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সতর্কও করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্পর্কের অবনতির মাঝে কলকাতার মেয়রের পদ থেকে ২০১৮ সালে ইস্তফা দেন শোভন।
তবে ২০১৯ সালে আচমকাই ভাইফোঁটার দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কালীঘাটের বাড়িতে গিয়েছিলেন শোভন। তা নিয়ে সেই সময় প্রবল চর্চা শুরু হয়। তৃণমূলে ফেরার জল্পনাও মাথাচাড়া দেয়। তবে সেসব জল্পনাকে মিথ্যে প্রমাণ করে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন ও বৈশাখী। যদিও গেরুয়া শিবিরে বেশিদিন মন টেকেনি তাঁদের। দল ছাড়েন দু’জনে। সেই প্রেক্ষাপটে গত ২২ জুন তাঁরা আচমকা নবান্নে যান। তাঁদের বেশ কিছুক্ষণ ‘দিদি’র সঙ্গে কথাও হয়। এরপর চলতি বছরের ভাইফোঁটাতেও মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে যান শোভন ও বৈশাখী। তার ঠিক মাসদুয়েক পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোভনের নামে স্বাভাবিকভাবেই নয়া জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে।
দেখুন ভিডিও: