ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধার প্রয়াণের শোক কিছুতেই সামলানো যাচ্ছে না। ভারাক্রান্ত মন কিছুতেই যেন বশে আসছে না। রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর এমনই দুরূহ পরিস্থিতির মধ্যে সময় কাটাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই অবস্থায় কোনও উৎসবে শামিল হওয়া সম্ভব নয় তাঁর পক্ষে। তাই শনিবার নিজের বাড়িতে ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রতি বছর এই দিনে ভগ্নীসম মমতার কাছে ফোঁটা নিতে যেতেন ‘মেন্টর’ সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এবারই সেই প্রথায় ছেদ পড়বে। প্রথমবার আর কালীঘাটে মমতার কাছে ফোঁটা নিতে, মিষ্টি খেতে আসবেন না তিনি। শুধু এবার কেন, আর কোনওবারই অভিভাবকসম, প্রিয় দাদা আসবেন না মমতার কাছে। এটা এত দ্রুত মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই এ বছর ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান আর করবেন না বলে ঠিক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে রীতি মেনে ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আচারটি হবে। নিজের ভাইদের ফোঁটা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এই দিনটায় তো তাঁর বাড়িতে দলের সব নেতাদের আনাগোনা থাকে। সবাই তাঁর কাছ থেকে এই বিশেষ দিনে ফোঁটা নেন, আশীর্বাদ-প্রণাম-খাওয়াদাওয়ার পর্ব থাকে। কিন্তু এবছর আর কিছুই হবে না কালীঘাটের বাড়িতে।
[আরও পড়ুন: ভাইফোঁটায় নাড়ু খেতে চেয়েছিলেন দাদা, সুব্রত নেই বিশ্বাসই হচ্ছে না বোনেদের]
একই পরিস্থিতি রাজ্যের আরেক মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও। তিনিও ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন। শোভনদেব-সুব্রতর সম্পর্ক ছিল দারুণ। একে অপরকে ‘তুই’ সম্বোধন করতেন। বঙ্গ রাজনীতিতে এ এক নজরকাড়া দৃষ্টান্ত ছিল বটে। তাই তো বৃহস্পতিবার রাতে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের পর তাঁর আক্ষেপ ছিল, ”আর আমাকে তুই বলার কেউ নেই।” বন্ধুবিদায়ে সব উৎসবের রং ফিকে তাঁর কাছে। তাই ভাইফোঁটার নিয়মটুকু পালন বাদে আর কিছুই হবে না তাঁর বাড়িতে।