কৃষ্ণকুমার দাস: ফের একবার সৌজন্যের রাজনীতির সাক্ষী থাকল বাংলার বিধানসভা। রাজ্যের আইনসভা থেকে বিজেপি বিধায়কদের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ শানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চোখা চোখা প্রশ্নবাণে নাস্তানাবুদ করেছিলেন বিরোধীদের। এর ১০ মিনিটের মধ্যেই পট পরিবর্তন। শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানাতে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছে যান বিরোধীদের বেঞ্চের সামনে। হাতজোড় করে সকলকে শুভেচ্ছা জানান তিনি। পালটা সৌজন্য দেখান বিরোধী বিধায়করা। পরে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর আগাম শারদীয়া শুভেচ্ছা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার বিধানসভায় ইডি-সিবিআইয়ের (CBI) অতিসক্রিয়তা নিয়ে নিন্দাপ্রস্তাব পেশ হয়। ভোটাভুটির আগে পেশ হওয়া প্রস্তাবের উপর ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসময় নাম না করে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেন। বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও সরব হন তিনি। ভাষণ শেষে শাসকদলের বিধায়কদের শারদীয়ার আগাম শুভেচ্ছা জানান মমতা। তারপরই সকলকে তাক লাগিয়ে পৌঁছে যান বিরোধী বেঞ্চের সামনে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়ান শুভেন্দু অধিকারী, মিহির গোস্বামীরা। হাতজোড় করে সৌজন্য দেখান তাঁরাও। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এদিন মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সৌজন্য বুঝিয়ে দিল তিনি স্রেফ তৃণমূলের পরিষদীয় নেত্রী বা সভানেত্রী নন, সকলের মুখ্যমন্ত্রীও বটে।
[আরও পড়ুন: SSC মামলা: সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য]
বিধানসভা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিরোধী দলনেতা। বিধানসভার অন্দরে সৌজন্য দেখালেও বাইরে সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে পালটা কটাক্ষ শানান। বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আগাম শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানালেন। কিন্তু আমরা তা প্রত্যাখ্যান করছি। উনি সনাতন রীতিনীতি বদলে দিচ্ছেন। আমরা মহালয়ার পর ওঁকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানাব।”
সনাতন মতে, মহালয়ায় পিতৃপক্ষ অবসান। পরদিন থেকে শুধু দেবীপক্ষ। তাই দেবীপক্ষের শুভেচ্ছা জানাতে হলে মহালয়ার পরেই জানাতে হয়। কিন্তু দুর্গাপুজো তো আর শুধু রীতিনীতির মধ্যে আটকে নেই। তাই উৎসবের শুভেচ্ছা যে কোনও সময় জানানো যেতেই পারে। এদিন সেটাই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বিজেপি সাধারণ শুভেচ্ছাকেও ধর্মের বেড়াজালে বাঁধার চেষ্টা করল।