মলয় কুণ্ডু: বন্ধের নামে যারা জনজীবনে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। বাস ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হচ্ছে। এমনকী ক্ষতিপূরণও দিতে হবে ভাঙচুরকারীদেরই। কঠোর পদক্ষেপ প্রশাসনের।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা দু’দিনের সাধারণ ধর্মঘটের (Nationwide Strike) প্রথম দিন, কার্যত কোনও সাড়াই পড়ল বঙ্গে। সকাল থেকে জোর করে বন্ধ সফল করার জন্য কয়েকটি জায়গায় বাম-কংগ্রেস নামলেও সাধারণ মানুষই তার প্রতিবাদ জানানোয় রণে ভঙ্গ দেয় বনধ সমর্থকরা। এরই মধ্যে গন্ডগোল ছড়াতে সকালে একাধিক বাসের উপর চড়াও হয় বন্ধ সমর্থকরা। প্রশাসনকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে পাহাড় সফররত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) বলেন, “বন্ধের ইস্যুকে আমরা সমর্থন করি। কিন্তু বন্ধ চাই না। বন্ধের নামে গুণ্ডামি করা হয়েছে। কেন বাস ভেঙেছে সিপিএম?” যারা বাস ভাঙচুর করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারি আইনে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, “লক্ষ লক্ষ টাকার আধুনিক বাস চলছে মানুষের জন্য। সেইসব সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে। যারা করেছে, ক্ষতিপূরণ তাদেরই দিতে হবে।”
[আরও পড়ুন: বগটুই কাণ্ডের রেশ বিধানসভায়, তৃণমূল-বিজেপির হাতাহাতিতে নাক ফাটল বিধায়কের, ভাঙল চশমাও]
আর পাঁচটা দিনের মতোই এদিনও স্বাভাবিক ছন্দেই ছিল মহানগর। জেলাগুলিতেও কাজকর্ম হয়েছে অন্যান্য দিনের মতোই। সচল ছিল পরিবহণ। খোলা ছিল দোকানপাট। হাওড়া, শিয়ালদহে রেল চলাচল ছিল স্বাভাবিক। বিমানবন্দরেও কোনও প্রভাব পড়েনি। স্কুল-কলেজ খোলা ছিল সর্বত্রই। কলকারখানাতেও পুরোদমে উৎপাদন হয়েছে। চা বাগানে শ্রমিকদের উপস্থিতিও ছিল যথেষ্ট। ব্যাংকের পরিষেবাতেও সমস্যা হয়নি। তবে বিক্ষিপ্তভাবে রেল অবরোধ, দোকানপাট, কারখানা বন্ধ করার চেষ্টা হলেও তা কিছুক্ষণের মধ্যেই সচল হয়ে যায়।
তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বামেদের বন্ধ সংস্কৃতির ইতি হয়েছে। এদিনও তার ব্যতিক্রম হল না। বন্ধে গোলমাল পাকানোর জেরে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। বনধের দ্বিতীয় দিনেও কড়া পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বন্ধ ব্যর্থ করার জন্য এদিন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এদিকে, রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “বামেরা রাস্তায় নেমে জোর করে বন্ধ করার চেষ্টা চালালেও মানুষই তা ব্যর্থ করে দিয়েছেন। বামেদের যে কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই, তা আরও একবার প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।”