সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) -অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে বেশ কিছু ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সঙ্গে একই মঞ্চে রয়েছেন অর্পিতা। সোমবার নজরুল মঞ্চ থেকে তা নিয়ে বিরোধীদের তোপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “আমার গায়ে কালি ছেটালে, আমার কাছে আলকাতরা আছে।” মু্খ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুক্রবার দিনভর জেরার পর শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী তথা প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। ফ্ল্যাট থেকে বিপুল নগদ টাকা পাওয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও। তা নিয়ে তোলপাড় বাংলা। বিরোধীরা বারবার কাঠগড়ায় তুলছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে একটি ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে, একই মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অদূরে অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। ওইদিনের ভিডিও ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সোমবার নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান থেকে সে বিষয়ে মু্খ খুললেন মমতা। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় নানা অনু্ষ্ঠানে যেতে হয় তাঁকে। সেখানে অনেকের অনুরোধে ছবিও তুলতে হয়। সেগুলিকে নিয়েও রাজনীতি করছে বিরোধীরা।
[আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতি: পার্থর দেহরক্ষীর পরিবারের ১০ চাকরি প্রাপককে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ]
এদিন বিরোধীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি চাই বিচার হোক, দ্রুত সত্যটা সামনে আসুক। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর যদি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হয় তাতেও কিছু মনে করব না। কিন্তু কেন আমার ছবি ব্যবহার করছেন টাকার পাহাড়ের সঙ্গে? আমি কারও পয়সায় খাই না। ওই মহিলাকে চিনি না।” এরপরই হুঙ্কার ছেড়ে তিনি বলেন, “যা আমি করি না, তার দায় আমি নেব না। আমার গায়ে কালি ছেটালে, আমার কাছে আলকাতরা আছে। যা ওয়াশিং মেশিনেও যাবে না।”
মহারাষ্ট্র প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে তোপ দেগে মমতা আরও বলেন, “ভাবছেন মহারাষ্ট্র ভেঙেছি, ঝাড়খণ্ড ভাঙব, তারপর বাংলা আসব। কিন্তু মনে রাখবেন, বঙ্গোপসাগর পেরিয়ে আসতে হবে। দিঘায় গেলে কুমির খাবে। সুন্দরবনে গেলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার কামড় দেবে, নর্থ বেঙ্গল দিয়ে এলে হাতি শুঁড়ে পেঁচিয়ে ছুঁড়ে ফেলবে।” অর্থাৎ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ইস্যুতে বিরোধীরা তাঁর ও তৃণমূলের নাম জড়ানোয় তিনি তিতিবিরক্ত। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন স্পষ্টভাবেই। পাশাপাশি অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন, বিঁধেছেন সিবিআইকেও। তাঁর কথায়, নোবেল চুরি-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলা দীর্ঘদিন সিবিআইয়ের হাতে থাকলেও কোনও সুরাহা এখনও হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের সমালোচনা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “সরকারি অনুষ্ঠানে দাঁড়িয়ে এই বিষয়ে মন্তব্য করা মানে অনুষ্ঠানের গরিমা নষ্ট করা। এহেন আচরণ বাংলার সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের পরিপন্থী। যুবক-যুবতীদের সর্বনাশ করছে এই সরকার, এমন তোপও দাগেন তিনি।