গৌতম ব্রহ্ম: বারানসী বা কাশী বরাবরই বাঙালির ‘সেকেন্ড হোম’। কিন্তু কাশীতে বাঙালির নিজস্ব কোনও সরকারি আবাস ছিল না। তীর্থ করার জন্য হোটেলের পিছনেই মোটা টাকা খরচ হয়ে যেত। উত্তরপ্রদেশে ভোট প্রচারে গিয়ে এই সতি্যটা উপলব্ধি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখনই তিনি বারানসীতে ‘বঙ্গভবন’ তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই ইচ্ছাপূরণে এবার তৎপর হল নবান্ন। শুক্রবার বৈঠক করে পূর্ত দফতরকে বঙ্গভবনের নকশা চূড়ান্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
জানা গিয়েছে, বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের একটি জায়গাকে বাছাই করা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে বা বারাণসীতে বহুতল নির্মাণের জন্য ফ্লোর এরিয়া রেশিও কত তা ইতিমধ্যেই সরকারিভাবে বারাণসী পুরনিগমের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে। জানা হচ্ছে, বাকি নিয়মকানুনও। বঙ্গভবনের নকশা তৈরির কাজও কয়েকদিনের মধ্যে শুরু হয়ে যাবে। এই ব্যাপারে পূর্তদপ্তররকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী।
নবান্ন সূত্রে খবর, গত শুক্রবার এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বৈঠক করেছেন তিনি। এক একরের সামান্য কম জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর খরচের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।বারাণসীর বাঙালিটোলার কাছে সোনারপুরা রোডের উপর কোচবিহার রাজাদের প্রসাদ ‘হাওয়া মহল’। এর সামনের ফাঁকা জমিতেই তৈরি হবে এই বেনারসী বঙ্গভবন।
[আরও পড়ুন: ব্লাড ক্যানসারের কবলে পুতিন! চাঞ্চল্যকর দাবি রুশ ধনকুবেরের]
এর পিছনে রাজনীতি দেখছেন বিরোধীরা। যদিও সেই অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “এর পিছনে কোনও রাজনীতি নেই। বরং বাংলার মানুষ উত্তরপ্রদেশে গেলে এই ভবনে থাকার সুবিধা পাবে। সে কথা ভেবে যদিও রাজ্য এই সিদ্ধান্ত নেয়, তাতে ক্ষতি কোথায়?” তারপরেও অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কথায়, “উনি ওখানে শুধু বঙ্গভবন বানাবেন কেন, লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়ান।”
প্রসঙ্গত, চিকিৎসার স্বার্থে বাংলা থেকে মুম্বই (Mumbai) পাড়ি দেন বহু ক্যানসার আক্রান্ত রোগী। চিকিৎসার স্বার্থেই তাঁদের দীর্ঘসময় থাকতে হয় আরব সাগরের তীরের রাজ্যে। তাঁদের পাশেও দাঁড়িয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু উত্তরপ্রদেশ নয়, মুম্বইয়ের ‘বঙ্গভবন’ বানাতে জমি চেয়েছেন তিনি। যাতে এ রাজ্য থেকে সেই শহরে যাওয়া ক্যানসার আক্রান্তের পরিবার কম খরচে থাকার জায়গা পান। জমি নিয়ে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের ছেলে তথা সে রাজ্যের পরিবেশ মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরের সঙ্গে কথাও হয়েছে মমতার। চেয়েছেন জমিও। শিব সেনার মুখপত্র ‘সামনা’য় সে কথা তুলে ধরেছেন দলীয় নেতা সঞ্জয় রাউত। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আরজিকে ‘ন্যায্য’ বলেই মনে করছেন শিব সেনার (Shiv Sena) নেতা।