সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমেরিকায় (US) টিকাকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে বেশ কিছুদিন হল। তবুও এতটুকু কমেনি করোনার (Coronavirus) দাপট। গত মঙ্গলবার একদিনে মারা গিয়েছেন প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ। যা সর্বকালীন রেকর্ড। এর মধ্যে খুবই খারাপ অবস্থা ক্যালিফোর্নিয়ার (California)। হাসপাতালে রোগীদের প্রায় জনবিস্ফোরণ হওয়ার মতো পরিস্থিতি! নেমেছে মৃত্যুর ঢল। এমন পরিস্থিতিতে সিএনএনের (CNN) এক রিপোর্টার দূরদর্শনে করোনার দাপট নিয়ে কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন। সেই মর্মস্পর্শী মুহূর্তের ভিডিওটি ভাইরাল হতে সময় নেয়নি।
একজন সাংবাদিককে তাঁর পেশাগত কারণেই বহু দুর্যোগ, বহু বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়। সেই সময় ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট করতে হয় তাঁকে। সকলের কাছে পৌঁছে দিতে হয় পরিস্থিতির হাল হকিকত। কিন্তু তাঁরা যে যন্ত্র নন, বরং মৃত্যুর তীব্র ভয়াবহতাকে চোখের সামনে দেখতে দেখতে কখনও কখনও ভেঙে পড়তেই পারেন, তা আরও একবার স্পষ্ট করে তুললেন সারা সিডনার নামের ওই সাংবাদিক। প্রায় দশটি হাসপাতাল ঘুরে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখেন সারা। দেখেন, কীভাবে করোনার ছোবলে একের পর এক পরিবারে নেমে আসছে বিপর্যয়।
[আরও পড়ুন: গণতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় খলিস্তানি পতাকা ওড়ানোর টোপ! কৃষকদের উসকানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের]
দেখতে দেখতে অজান্তেই বোধহয় গলার কাছে জলা পাকিয়েছিল যন্ত্রণা। তাই রিপোর্ট করার সময় আচমকাই থেমে গিয়ে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করতে দেখা যায় তাঁকে। চোখ চিকচিক করে ওঠে টলটলে অশ্রুবিন্দুতে। যা দেখে শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার লাইন মনে পড়ে যেতে বাধ্য। ‘মানুষ বড় কাঁদছে, তুমি মানুষ হয়ে পাশে দাঁড়াও।’
পরে অবশ্য সারা ক্ষমা চেয়ে নেন এতটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ার জন্য। বলেন, ”এই নিয়ে দশটি হাসপাতালে গেলাম। চোখের সামনে দেখেছি কীভাবে পরিবারগুলি প্রিয়জনকে হারানোর বেদনায় আকুল হয়ে রয়েছে। আমি আর নিতে পারছি না।” তাঁকে সান্ত্বনা দিতে দেখা যায় সঞ্চালক অ্যালিসনকে। তিনি জানিয়ে দেন, ক্ষমা চাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। বলেন, ”এই ভয়ংকর সময়ে আমরা সবাই শোকাচ্ছন্ন. সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তোমাকে কাজ করতে হচ্ছে।”
পরে সারা সকলের কাছে অনুরোধ করেছেন, কোভিড বিধি অত্যন্ত কড়া ভাবে মেনে চলার জন্য। প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়। এর আগে ২৬/১১ মুম্বই হামলার সময়ও এভাবেই রিপোর্টিংয়ের সময় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গিয়েছিল সারাকে।