সৌরভ মাজি, বর্ধমান: বজ্রপাতে দুর্ঘটনা বাড়ছে। বিশেষত শহরাঞ্চলে, যেখানে গাছপালার সংখ্যা কম, সেখানে প্রাণহানির সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। গবেষণা বলছে, নারকেল গাছ বজ্রপাত রোধের অন্যতম বড় ভূমিকা নেয়। সেইমতো রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পরিকল্পনামাফিক নারকেল গাছ রোপনের পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, শুধুই বজ্রপাত রোধ নয়। দক্ষিণবঙ্গে অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবেও নারকেলের ভবিষ্যৎ বেশ উজ্জ্বল। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত বর্ধমান কৃষি কলেজের পড়ুয়া, অধ্যাপকরা তাই পরিকল্পনা করে জমিতে নারকেল চারা রোপণের কাজ শুরু করে দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই মিড-ডে মিল পরিবেশন, বেহাল চিত্র কাটোয়ার স্কুলের]
বর্ধমান কৃষি কলেজের ভিতরের রাস্তা, কৃষি খামারের রাস্তা ও সেচ খালের ধার বরাবর নারকেল চারা পুঁতে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, কলেজ সংলগ্ন মাটিতীর্থ-কৃষিকথা প্রাঙ্গণেও লাগানো হয়েছে চারা। সবমিলিয়ে নতুন চারার সংখ্যা প্রায় ৫০০। গত ২৬ আগস্ট বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বজ্রপাতে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে বেশি সংখ্যায় নারকেল গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। পাশপাশি, নারকেল চাষ করে আয় বাড়বে বলেও আশাপ্রকাশ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানান, এই বিষয়ে একটি রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে। দ্রুত তা চূড়ান্ত করে বাস্তবায়নের পথে এগনো হবে।
নারকেল চারা রোপণ নিয়ে বর্ধমানের কৃষি কলেজের অ্যাসোসিয়েট ডিন তপনকুমার মাইতি জানান, মোহনপুর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির ৫০০ নারকেল গাছের চারা আনা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের মাটি উৎসব প্রাঙ্গণে চারিদিকে ও কলেজের খামারে তা বসানো হয়েছে। তিনি জানান, জেলার অন্যত্রও নারকেল চারা বসানোর বিষয়ে পূর্ব বর্ধমানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে তাঁরা কথা বলবেন।
[আরও পড়ুন: দুর্গাপুজোর কারণে উপনির্বাচনে রাজি নয় রাজ্য সরকার, দিন পিছল কমিশন]
নতুন গাছগুলিকে যথাযথ যত্নের জন্য ক্যাম্পাসের অধিকাংশ গাছ পড়ুয়াদের দত্তক দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। অধ্যাপক সৌমেন বেরা বলেন, ‘জমির আলে নারকেল গাছ লাগিয়ে ভাল আয় করা যেতে পারে। তার জন্য মূল জমির কোনও ক্ষতি হয় না। বাগান করেও নারকেল গাছের চারা লাগানো যেতে পারে। ফল পেতে কয়েকবছর সময় লাগে। সেই সময় বাগানে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন ধরণের সবজি, কন্দের চাষ করা যায়।’ আরেক অধ্যাপক দীপককুমার ঘোষের কথায়, ‘প্রতি হেক্টরে ছ থেকে সাতশো চারা লাগানো সম্ভব। সাথী ফসল হিবেস ফুল ও ফল চাষও হতে পারে।’ একদিকে বজ্রপাতের বিপদ থেকে রক্ষা, আরেকদিকে অর্থকরী ফসল হিসেবে বাড়তে গুরুত্ব, দুয়ে মিলে নারকেল চাষে নতুন দিশা দেখাচ্ছে সাম্প্রতিক কৃষি গবেষণা।
The post অর্থকরী ফসল হিসেবে বাড়ছে নারকেলের গুরুত্ব, সাম্প্রতিক গবেষণায় নতুন আশা appeared first on Sangbad Pratidin.