দীপঙ্কর মণ্ডল: চলতি শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের পড়ুয়াদের বিএ, বিএসসি, বিকমে ভরতি নেওয়া হবে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইন প্রক্রিয়ায়। এই কাজে উচ্চশিক্ষা দপ্তর একটি নতুন পোর্টাল তৈরি করছে। বাড়ি থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন ছাত্রছাত্রী বা তাঁদের অভিভাবকরা। উচ্চমাধ্যমিকস্তরে প্রাপ্ত নম্বর ও পছন্দের কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জানাতে হবে। এরপর মেধার ভিত্তিতে সংরক্ষণ মেনে চলবে ভরতি প্রক্রিয়া। প্রথম দু’দফা পরেও আসন ফাঁকা থাকলে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিজের মত ছাত্রছাত্রীদের নিতে পারবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) স্নাতকের নয়া ভরতি প্রক্রিয়ায় অনুমোদন দিয়েছেন বলেই খবর।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শিক্ষামন্ত্রী এদিন সেখানে মনে করিয়ে দেন যে, গত দু’বছর কোভিডের কারণে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিকমত ক্লাস হয়নি। তিনি বলেন, “কোভিডের কারণে গত দু’টি শিক্ষাবর্ষ এলোমেলা হয়ে গিয়েছে। একটি প্রক্রিয়া শুরু আগে তাই উপাচার্যদের বক্তব্য জানা দরকার ছিল।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বৈঠক শেষে বলেন, “নতুন ভরতি প্রক্রিয়া অত্যন্ত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এরফলে আরও স্বচ্ছতা বাড়বে।”
[আরও পড়ুন: কাঁচিতে হাত কাটা মহিলাকে দেওয়া হল কুকুরে কামড়ানোর ইঞ্জেকশন, কাঠগড়ায় সরকারি হাসপাতাল]
চলতি বছরে ‘কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট’ চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভরতিতে গোটা দেশের জন্য চালু হয়েছে এই অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষা। গত এপ্রিল মাসে এ রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য স্নাতকে ভরতিতে কেন্দ্রীয় অনলাইন প্রক্রিয়া চালু নিয়ে আলোচনা হয়। প্রস্তাব যায় নবান্নে। এদিন ব্রাত্য বলেন, “চলতি বছরে স্নাতকে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদের ভরতি নেওয়ার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। দপ্তরের সঙ্গে উপাচার্যদের বৈঠক হল। কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনে ভরতি প্রক্রিয়ায় প্রস্তুত কিনা তা তাঁরা জানালেন। আমরা কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারি না। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিকাঠামোর কি অবস্থা তা উপাচার্যরা জানিয়েছেন। এই গ্রাউন্ড রিয়েলিটি জানা দরকার ছিল।” কয়েকদিনের মধ্যে প্রকাশিত হবে উচ্চমাধ্যমিকের ফল। তার আগেই স্নাতকে ভরতি নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে উচ্চশিক্ষা দপ্তর।
গত সাত বছর ধরে বিএ, বিএসসি, বিকম অনার্স বা জেনারেলের ভরতি চলছে অনলাইন প্রক্রিয়ায়। এবার চালু হতে চলেছে কেন্দ্রীয় অনলাইন প্রক্রিয়া। অর্থাৎ রাজ্যের প্রায় ৫৫০ টি ডিগ্রি কলেজের জন্য প্রকাশ হবে একটাই মেধা তালিকা। ভর্তিকে কেন্দ্র করে দর্নীতি পুরোপুরি বন্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে উচ্চশিক্ষা দফতর। কোভিডের কারণে গত দু’বছর স্নাতকে ভর্তির আবেদনের জন্য ফি নেয়নি রাজ্য। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রে খবর জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় অনলাইন প্রক্রিয়ায় ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। ২০১৩ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় অনলাইনে ভর্তি চালু হয়। তবে পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। এবার গোটা রাজে্যই চালু হতে চলেছে সেই ব্যবস্থা।