বিক্রম রায়, কোচবিহার: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং কাণ্ডের রেস কাটতে না কাটতেই এবার কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজেও পড়ুয়াদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ উঠল। দুজন ছাত্রকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে সিনিয়রদের বিরুদ্ধে। অত্যাচারের জেরে এক ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ। যদিও কোনক্রমে প্রাণ বেঁচে গিয়েছেন তিনি।
অভিযোগ, ওই কলেজের প্রথম বর্ষের দুজন ছাত্রের সঙ্গে ভাড়াবাড়িতে আরও কয়েকজন সিনিয়র থাকছিলেন। সেই সিনিয়রদের বিরুদ্ধে দুজন ছাত্রকে বেল্ট দিয়ে বেধড়ক মারধর করা এবং অপমান করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনার জেরে এ ছাত্র আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে, যদিও কোনক্রমে তাঁর প্রাণ বেঁচে যায়। গুরুতর অবস্থায় ছাত্রটিকে উদ্ধার করে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অপর আরেক ছাত্রর শরীরে গুরুতর আঘাত থাকায় তাঁকে কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলায়। আক্রান্ত ছাত্রের বাবা এই ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, দুজন সিনিয়র এবং দুজন জুনিয়রের মধ্যে বিবাদের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। একজনকে ইতিমধ্যে আটক করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘বাইরে সন্ত্রাস, ভিতরে নজরদারি’, ধূপগুড়ির বিধায়কের শপথেও বিস্ফোরক রাজ্যপাল]
শহরের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আক্রান্ত ছাত্র অভিযোগ করে বলেন, “কোচবিহার শহর সংলগ্ন টাকা গাছ এলাকায় একটি মেসে থাকছিলাম এবং এক বন্ধুও থাকত। ওই মেসে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র এবং একজন পাস আউট ছাত্র থাকতেন।” তিনি আরও জানান, সেই পাস আউট ছাত্র সেখানে টিউশন করাতেন। সিনিয়ররা সেখানে নিয়মিতভাবে মেয়েদের নিয়ে এসে অবৈধ কাজকর্ম চালাত। প্রতিবাদ করেছিলেন প্রথম বর্ষে দুই ছাত্র। মোবাইলে ছবি তুলেছিলেন। এই বিষয়টি জানার পর সেই সিনিয়ররা তাঁকে অকথ্য গালিগালাজ করে। মেসে নিয়ে গিয়ে বেল্ট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। শুধু তাই নয় তাকে কলেজে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেয়। তাঁর বন্ধুকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। এই ঘটনায় অপমানিতবোধ করে শেষ পর্যন্ত আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেব প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়া। অভিযোগ দায়ের করে ওই ছাত্রের বাবা এই ঘটনার দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে কোচবিহার পলিটেকনিক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রণব সাহা রায় বলেন, কলেজের কোনও ছাত্রকে মারধর করার জন্য সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে । অসুস্থ ওই ছাত্রের সঙ্গে অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সদস্যরা গিয়ে দেখা করবেন। তারপর এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যদিও এই ঘটনায় যে ভাড়া বাড়িতে এই বিবাদ হয়েছে তার মালিক কার্তিক শিল জানান, গভীর রাতে দুজন ছাত্রকে তার সিনিয়াররা মারধর করেছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে রাতে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। ওই ভাড়াবাড়িতে মোট আটজন থাকছিলেন।