অর্ণব আইচ: কলেজে পড়াশোনার প্রচণ্ড চাপ। এমনকী, পড়াশোনার জন্য ভাল করে খাওয়াদাওয়াও করতেন না ছাত্রী। সেই কারণে মেয়েকে বকাবকিও করতেন মা। তারই জেরে ঝগড়াঝাটির পর ঘরের ভিতরই আত্মঘাতী হলেন এক মেধাবী কলেজছাত্রী।
ঘটনাটি ঘটেছে পর্ণশ্রীতে। আজ, শুক্রবার সকালে উদ্ধার হয় ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই কলেজছাত্রীর নাম সুদেষ্ণা ভৌমিক (২১)। পর্ণশ্রী থানা এলাকার মায়াদাসী রোডের বাড়িতে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন ওই তরুণী। দক্ষিণ কলকাতার নিউ আলিপুর এলাকার একটি নামী কলেজের প্রাণিবিদ্যায় অনার্স পড়তেন। মেধাবী ওই ছাত্রী পড়াশোনা নিয়েই থাকতেন। বৃহস্পতিবার কলেজ থেকে ফিরে ফের পড়তে বসে যান। বিকেল থেকে কয়েকটি বিস্কুট খেয়ে ছিলেন মাত্র।
[আরও পড়ুন: ‘রাষ্ট্রপতি ভোটে দ্রৌপদী মুর্মুর জয়ের সম্ভাবনা বেশি’, মমতার মন্তব্যে জল্পনা]
রাত সাড়ে দশটা নাগাদ তাঁর মা রাতে খাওয়ার জন্য ডাকতে আসেন। কিন্তু ছাত্রী তাঁর মা মঞ্জুলা ভৌমিককে জানিয়ে দেন, তিনি পড়াশোনার চাপে রয়েছেন। গোটা রাত ধরে তাঁকে পড়তে হবে। রাতে তিনি কিছু খাবেন না। মা মেয়েকে স্বাস্থ্য খারাপ হয়ে যাবে বলে বোঝাতে শুরু করেন। কিন্তু মেয়ে কিছুই বুঝতে রাজি নন। তাঁর মন শুধু পড়ার বইয়ের দিকে। ছাত্রীর মায়ের দাবি, পড়াশোনার জন্য তাঁর মেয়ে গত দু’দিন ধরে প্রায় কিছুই খাননি। এর পর মেয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন, তাই মেয়েকে বকাবকি করতে শুরু করেন মা। মেয়েও জবাব দিতে থাকেন। মায়ের সঙ্গে মেয়ের ঝগড়া শুরু হয়। এর পর ওই ছাত্রী বাড়ির দোতলায় শোওয়ার ঘরে ঢুকে দরজা লক করে দেন। রাগ করে মা তাঁর ১২ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে অন্য ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন।
সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে মঞ্জুলা তাঁর মেয়ে সুদেষ্ণাকে ডাকতে থাকেন। কিন্তু আধ ঘণ্টা ধরে ডাকার পর তাঁর সন্দেহ হয়। ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকায় দুই ঘরের মাঝখানে থাকা একটি দরজা খুলে ফেলেন তিনি। ঘরে ঢুকে দেখেন, সিলিং ফ্যান থেকে শাড়ির ফাঁস গলায় দিয়ে ঝুলছেন তাঁর মেয়ে। তিনি মেয়েকে কোনওমতে নামিয়ে এনে প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের খবর দেন। বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।