অর্ণব আইচ: রাজভবনের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ইস্যুর পরতে পরতে রহস্য। পুলিশের হাতে রাজভবনের অন্তত ৮ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। যা পরীক্ষা করে অনেক কিছুই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। এর পর ওই তরুণীও পুলিশের কাছে নিজের বয়ান দিয়েছেন। তাতে অনেক তথ্যই উঠে এসেছে। তরুণীর দাবি, ঘটনার দিন তিনি ১৫ মিনিট ছিলেন রাজভবনের কনফারেন্স রুমে, রাজ্যপালের সঙ্গে 'একা'। পরেরদিন প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে কথা হয়েছিল। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ওইদিন বিকেলে তিনি কাঁদতে কাঁদতে রাজভবন থেকে বাইরে বেরিয়ে আসছেন। তাতেই অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে কিছু একটা ঘটেছে।
যে তিনটি সিসিটিভির ফুটেজ (CCTV Footage) বৃহস্পতিবার রাজভবন প্রকাশ করেছে, সেগুলিতে অভিযোগকারিণীকে দোতলা থেকে নেমে এভাবে কাঁদতে দেখা যায়নি। ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মহিলা যে কাঁদছেন, তা দেখছেন একজন মহিলা-সহ রাজভবনের চারজন কর্মী। এছাড়াও আতঙ্কিত হয়ে কাঁপতে কাঁপতে একতলার এক বিশেষ সচিবের ঘরেও প্রবেশ করেছিলেন অভিযোগকারিণী। সেখানে এক চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসাও করেন। সেই ঘরে চিকিৎসক, বিশেষ সচিব-সহ মোট তিনজন ছিলেন। ওই তিনজনকে কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) তলব করলেও তাঁরা হাজিরা দেননি। পুলিশ সূত্রে খবর, রাজভবনের দোতলায় সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তাই কনফারেন্স রুম বা করিডরের কোনও ফুটেজ হাতে আসেনি।
[আরও পড়ুন: মদ খেয়ে রাস্তায় তাণ্ডব মহিলাদের, পুলিশকে কামড়! ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শোরগোল]
ওইদিন ঠিক কী ঘটেছিল? জানা যাচ্ছে, গত ২ মে বিকেল ৫টা ১৮ মিনিটে রাজভবনের (Rajbhaban) দোতলার সিঁড়ি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে একতলায় নেমে আসছেন অভিযোগকারিণী। তাঁর পিছনে অন্য এক মহিলাকেও নামতে দেখা যায়। তিনি পুলিশকে জানান, গত ২৪ এপ্রিল প্রথমবারের জন্য শ্লীলতাহানির অভিযোগের পর অভিযোগকারিণীর মা ও বাবা রাজভবনের আবাসনে গিয়ে সান্ত্বনা জানান। পুলিশকে মহিলা জানান, ২ মে বিকেল সোয়া চারটে নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর (PM Narendra Modi) সফর নিয়ে কথা বলতেই রাজ্যপাল মহিলাকে ডেকে পাঠান। তিনি কোনও খারাপ কিছু ঘটতে পারে, তা শঙ্কা করেই ইপিএবিএক্স অফিস থেকে সুপারভাইজারকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যপালের অফিস লাগোয়া কনফারেন্স রুমে যান।
[আরও পড়ুন: বিয়ে পিছিয়েছে কনেপক্ষ, রাগে বাগদত্তার মাথা কেটে সঙ্গে নিয়েই পালাল যুবক!]
সুপারভাইজারকে দেখে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হন রাজ্যপাল। কেন তাঁকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন, তা জিজ্ঞাসা করেন। মহিলা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বৈঠক বলেই তিনি সুপারভাইজারকে নিয়ে এসেছেন। মিনিট সাতেক পর সুপারভাইজারকে রাজ্যপাল ঘর থেকে চলে যেতে বলে। এর পরও অন্তত ১৫ মিনিট মহিলা রাজ্যপালের কনফারেন্স রুমে ছিলেন একা।