shono
Advertisement
Alimony

খোরপোশ নিয়ে বাড়ছে মতবিরোধ, প্রয়োজন সহিষ্ণুতা

খোরপোশ নিয়ে ‘গাইডলাইন’ ঠিক করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
Published By: Biswadip DeyPosted: 02:12 PM Dec 13, 2024Updated: 02:12 PM Dec 13, 2024

খোরপোশ নিয়ে দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ বাড়ছে। সেজন্য এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব এবং ‘গাইডলাইন’ ঠিক করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।

Advertisement

আধুনিক জীবনযাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে মানুষের ভাবনাচিন্তা। তা যে সবসময় ইতিবাচক, এমনটা মোটেও বলা চলে না। বিশেষত, দাম্পত্য জীবন, মানুষে-মানুষে পারস্পরিক সম্পর্কে যে-টানাপোড়েন বর্তমানে তৈরি হচ্ছে, তা আগে দেখা যেত না। একসময় ঘরের চার দেওয়ালে আবদ্ধ বহু মহিলা গার্হস্থ হিংসার শিকার হত। পণের জন্য বধূহত্যা ছিল প্রায় নিত্য ঘটনা। এখনও যে পণ বা অন্য কারণে মহিলারা নির্যাতনের শিকার হয় না, তা নয়। কিন্তু সেই ধরনের ঘটনার আধিক‌্য কিছুটা কমেছে। সেই সূত্রেই মহিলাদের উপর গার্হস্থ হিংসা-বন্ধে যে ‘৪৯৮এ’ ধারা তৈরি হয়েছিল, সেই ‘একমাত্রিক’ আইন বর্তমানে কতখানি প্রযোজ্য, তা বিচার করা প্রয়োজন।

স্বয়ং সুপ্রিম কোর্টই মনে করে, পণবিরোধী এই আইনের অপব্যবহার করে বহু মহিলা। মিথ্যা অভিযোগ এনে স্বামী-শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের হেনস্তা, টাকা আদায় থেকে শুরু করে মানসিক নির্যাতন, কিছুই বাদ যায় না। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে অতুল সুভাষ নামে এক যুবক সেই কারণে আত্মহত্যা করেছেন। তঁার বয়ান দেশে তীব্র আলোড়ন ফেলেছে। স্ত্রী নামী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত হয়েও মাসে ৪০ হাজার টাকা খোরপোশ, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ৩ কোটি এবং সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়ার জন্য ৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন বলে অভিযোগ।

এই ধরনের ঘটনা যে আকছার ঘটছে, সুপ্রিম কোর্টও তা অস্বীকার করেনি। তাই খোরপোশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব এবং ‘গাইডলাইন’ ঠিক করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এবং আট দফা সেই প্রস্তাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বাস্তবোচিত। যেমন: স্বামী-স্ত্রীর আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে, স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যতের জন্য জরুরি চাহিদা মেটাতে কী প্রয়োজন, উভয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পেশা, আয়, সম্পত্তির পরিমাণ, আইনি লড়াইয়ের জন্য স্ত্রীর কতটা আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন, স্ত্রী পরিবারের দেখভাল করতে চাকরি ছেড়েছেন কি না, খোরপোশ দেওয়ার পর স্বামীর আর্থিক অবস্থা এবং ভরণ-পোষণের অন্য দায়িত্বও বিবেচনা করে– তবেই খোরপোশের অঙ্ক নির্ধারণ করার কথা বলা হয়েছে।

স্ত্রী-সন্তানের ভরণপোষণ অবশ্যই স্বামীর দায়িত্ব। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, স্ত্রী উচ্চশিক্ষিত, এমনকী, স্বামীর চেয়ে বেশি আয় করেও খোরপোশ চেয়ে হেনস্তা করেন। দ্বিতীয়ত, মিথ্যা অভিযোগে বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকে জেলের ঘানি টানতে হয়েছে, এমন উদাহরণও বিরল নয়। কোনও দম্পতি পরিস্থিতির চাপে বিচ্ছিন্ন হতেই পারে। কিন্তু তাদের মধ্যে বিদ্বেষমূলক মনোভাব তৈরি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। তার রেশ শুধু দু’টি পরিবারের মধ্যে নয়, পড়ে সন্তানদের উপরও। বৃহত্তর সামাজিক ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়ে। এ সমস্ত কারণে বহু মানুষের ‘বিয়ে’ নামক প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা উঠে যাচ্ছে। তাই সব পক্ষেরই সচেতন ও সহিষ্ণু হওয়া জরুরি। আইন রয়েছে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য। আইনের অপব্যবহার মানে কোথাও গিয়ে ‘সুরক্ষা’-র ধারণাটিকে হীনশক্তি করে দেওয়া। সুপ্রিয় কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই কাজে শীর্ষ আদালতের সমর্থন নেই।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • খোরপোশ নিয়ে দ্বন্দ্ব ও মতবিরোধ বাড়ছে।
  • সেজন্য এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব এবং ‘গাইডলাইন’ ঠিক করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
  • বহু মানুষের ‘বিয়ে’ নামক প্রতিষ্ঠানের উপর ভরসা উঠে যাচ্ছে। তাই সব পক্ষেরই সচেতন ও সহিষ্ণু হওয়া জরুরি।
Advertisement