বিপ্লবচন্দ্র দত্ত, কৃষ্ণনগর: মৃত্যু স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক, তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেতে দাহকাজ শেষ মুহূর্তে আটকে মৃতদেহ পাঠানো হল ময়নাতদন্তে৷ নবদ্বীপের জওহরলাল নেহরু রোডের বাসিন্দা সুনীতা হংস বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক বলে মেনে নিতে পারছিলেন না তাঁর পরিবারের সদস্যরা৷ এই টানাপোড়েনের মাঝেই সংশয় দূর করতে শেষপর্যন্ত ময়নাতদন্তে দেহ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার৷ শনিবার রাতে যা দেখে বিস্মিত শ্মশানযাত্রীরা৷

[ আরও পড়ুন: দু’চাকায় পা রেখেই স্বনির্ভর, দুর্গাপুরের প্রথম মহিলা অ্যাপ বাইক চালক সুস্মিতা দত্ত ]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জওহরলাল নেহরু রোডের বাসিন্দা পেশায় সেচ দপ্তরের কর্মী কানুপ্রিয় হংসের সঙ্গে বছর চারেক আগে হুগলির ত্রিবেণী নিবাসী সুনীতা বিশ্বাসের সামাজিক মতে বিয়ে হয়েছিল। যদিও সুনীতাদেবীর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা বলছেন, বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে গৃহবধূ সুনীতাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়তেন। ব্লাড সুগার-সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। শনিবার দুপুরে পর সুনীতাদেবী অসুস্থ বোধ করলে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভরতি করেন। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন বিকেল চারটে নাগাদ সুনীতাদেবীর মৃত্যু হয়।
মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শনিবার সন্ধ্যায় নবদ্বীপে আসেন সুনীতাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজন। কিন্তু বেশ কিছুটা সময় কেটে যাওয়ার পর সুনীতাদেবীর বাড়ির সদস্যদের মনে সন্দেহ তৈরি যায়। তাঁদের সন্দেহ হয়, সুনীতাদেবীর মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে হয়নি। মৃত্যুর কারণ জানতে হাসপাতালের রিপোর্ট দেখতে চাইলে তা সুনীতাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজনকে দেখতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, নবদ্বীপ হাসপাতালের মধ্যে সুনীতা দেবীর বাপের বাড়ির লোকজনকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। যদিও ওই অভিযোগ মানতে চাননি শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। তারা যথারীতি হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ বাড়িতে এনে কিছুক্ষণ রাখার পর মৃতদেহ সৎকার করার জন্য নবদ্বীপ মহাশ্মশানে নিয়ে যান। পারলৌকিক কিছু কাজকর্ম হয়েও যায়। মৃতদেহ দাহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে তারই মধ্যে শনিবার রাতে সুনীতার মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়ে নবদ্বীপ থানায় আবেদন করেন মৃতের ভাই৷
[ আরও পড়ুন: দলীয় কর্মীর বাড়িতে নিশিযাপন খাদ্যমন্ত্রীর, পাত পেড়ে খেলেন আলু সেদ্ধ-ভাত]
সেই অভিযোগ পাওয়ার পরই তৎপর হয়ে উঠে নবদ্বীপ থানার পুলিশ। তারা তড়িঘড়ি পৌঁছে যায় নবদ্বীপ মহাশ্মশানে। ততক্ষণে মৃতদেহ বৈদ্যুতিক চুল্লিতে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া প্রায় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ গিয়ে আটকে দেয় দাহ কাজ। এরপর শ্মশানঘাট থেকে ওই গৃহবধূর মৃতদেহটি উদ্ধার করে নবদ্বীপ থানায় নিয়ে আসে। রবিবার দুপুরে বধূর দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
The post মৃত্যুর কারণ নিয়ে সংশয়, দাহকাজ আটকে মৃতদেহ পাঠানো হল ময়নাতদন্তে appeared first on Sangbad Pratidin.