সোমনাথ রায়, নাগপুর: দেশে ইন্ডিয়া। বাংলায় একাই লড়বে তৃণমূল। চাকলার সভা থেকে অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কার্যত একই পথে হাঁটল প্রদেশ নেতৃত্ব। বাংলায় কোনও অবস্থাতেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা উচিত নয়। আরও একবার হাইকমান্ডের কাছে নিজেদের মনোভাব তুলে ধরল প্রদেশ নেতৃত্ব। তাদের বক্তব্য, এই জোটে আখেরে লাভ হবে বিজেপির। তাতে ‘ইন্ডিয়া’র প্রধান লক্ষ্য ধাক্কা খাবে। তাছাড়া রাজ্যে দলের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরের ‘হ্যায় তৈয়ার হাম’ কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে কংগ্রেস সভাপতির তৈরি করে দেওয়া ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স কমিটির সঙ্গে হোটেলেই আলাদা করে দেখা করেন বঙ্গ কংগ্রেসের দুই নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী ও দীপা দাসমুন্সি। সূত্রের খবর, সেখানে দুই নেতাই নিজেদের অতীতের ভিন্ন মত দূরে রেখে এক সুরে তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা না করার আবেদন করেন মুকুল ওয়াসনিক, অশোক গেহলট, ভুপেশ বাঘেল, সলমন খুরশিদ, মোহন প্রকাশদের কাছে। তাঁদের বক্তব্য, গত কয়েকবছরে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বারবার আক্রান্ত হয়েছেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। যদি রাজ্যে আসন সমঝোতা হয়, তাহলে ধাক্কা খাবে ‘ইন্ডিয়া’ তৈরির প্রধান লক্ষ্য।
[আরও পড়ুন: ফিরে দেখা: মেট্রোর বিকিনি গার্ল থেকে রশ্মিকার ডিপফেক, ২০২৩-এ ভাইরাল যারা]
‘ইন্ডিয়া’র এক ও একমাত্র লক্ষ্য হল, বিজেপির হাত থেকে দেশকে বাঁচানো। আসন সমঝোতা হয়ে গেলে যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী থাকবে না, সেখানে কংগ্রেসের যাবতীয় ভোট গিয়ে চলে যাবে বিজেপির দিকে। কারণ রাজ্যের প্রায় বেশিরভাগ কর্মী-সমর্থকই তৃণমূলের উপর বিরক্ত, ক্ষুব্ধ। শুধু তাই নয়, সংগঠনের ভবিষ্যৎও প্রশ্নের সামনে চলে আসবে। একান্ত আসন সমঝোতা করতে হলে বামেদের সঙ্গে হোক। নাহলে কংগ্রেস একাই লড়ুক সব আসনে।
বঙ্গ রাজনীতিতে অধীর ও দীপার মধ্যে বরাবরই দেখা গিয়েছে মতানৈক্য। এমনকী গত লোকসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে সব কেন্দ্রে আসন সমঝোতা হলেও মানতে রাজি হননি দীপা। ফলে রায়গঞ্জে লড়াই হয়েছিল ত্রিমুখী। যার জেরে জিতে যান বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরি। সেই অধীর-দীপাও এখন চলে এসেছেন কাছাকাছি। সূত্রের খবর, যে বাসে করে শহরের পাঁচতারা হোটেল থেকে আজাদ ময়দানে রওনা দিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতারা, সেখানেও কথা হয় দুই বঙ্গ নেতার মধ্যে। বাংলায় আসন সমঝোতা নিয়ে অধীরের সিদ্ধান্তকে নাকি সেখানেও সমর্থন করেছেন প্রিয়রঞ্জনপত্নী।