সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কংগ্রেসের অন্দরেও কমবেশি সকলেই জানেন, একমাত্র তিনি আসরে নামলেই দলের অচলাবস্থা কাটতে পারে। সোনিয়া নিজেও সেকথা জানেন। সম্ভবত সেই কারণেই দলের সমস্যা মেটাতে এবং কর্মীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সোনিয়া আবার সামনে থেকে দলের নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করলেন। দলের অন্দরে তো বটেই সংসদেও একেবারে সামনে থেকে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সোনিয়া (Sonia Gandhi)। গত কয়েকদিনে বিক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েক দফা বৈঠক করেছেন সোনিয়া। আগামী শনিবার তিনি কংগ্রেসের সব সাধারণ সম্পাদক এবং রাজ্যস্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেদিনই দলের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে পারেন সোনিয়া। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা হবে।
পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবারই সংসদে সরব হয়েছিল কংগ্রেস। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিবাদের ঝাঁজের সামনে খুব একটা দাগ কাটতে পারেনি আসনের বিচারে দেশের বৃহত্তম বিরোধী দল। সেই হাল দেখে নাকি জাতীয় রাজনীতিতে নিজেদের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখতে, তা জানা নেই, তবে বুধবার লোকসভায় কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীদের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় খোদ সোনিয়াকে। লোকসভায় বিরোধী দলের প্রথম সারির আসনে বসে কংগ্রেস (Congress) ও এনসি (NC), এনসিপি-সহ অন্যান্য সাংসদদের নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় সোনিয়াকে। এই ভূমিকায় সচরাচর দেখা যায় না কংগ্রেস দলনেত্রীকে। বিক্ষোভের মাঝে তাঁকে চুপচাপ নিজের আসনে বসে থাকতেই দেখা যায়। অথচ এদিন প্রশ্নোত্তরপর্বে অধ্যক্ষ যখন একে একে বিরোধী দলের সাংসদদের প্রশ্ন করতে ডাকছেন, তখন হাতের ইশারায় তাঁদের বসে যাওয়ার নির্দেশ করতে দেখা যায় সোনিয়াকে। সেই মতো ন্যাশনাল কনফারেন্স সাংসদ হাসনৈন মাসুদি, আইইউএমএল সাংসদ মহম্মদ বশিরকে প্রশ্ন না করে স্লোগান দিতেও দেখা যায়। প্রশ্নোত্তর পর্বের পাশাপাশি জিরো আওয়ারে মিড-ডে মিল নতুন করে চালানোর পক্ষেও সওয়াল করেন সোনিয়া। এই নিয়ে চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয়বার জিরো আওয়ারে বক্তব্য রাখলেন সোনিয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু বিরোধীদের নয়, দলের মধ্যেও সোনিয়া বার্তা দিতে চাইছেন যে, তিনিই দলের কাণ্ডারী।
[আরও পড়ুন: ‘সব সমস্যার জন্য দায়ী নেহরু’! কাশ্মীর ইস্যুতে ফের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ নির্মলার]
এ তো গেল সংসদের কথা। সংসদের বাইরেও সমানভাবে সক্রিয় সোনিয়া। ইতিমধ্যেই জি-২৩ (G-23) নেতাদের একাধিক প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। বিক্ষুব্ধ নেতাদের কংগ্রেস সভানেত্রী আশ্বাস দিয়েছেন সামনেই দলের সাংগঠনিক নির্বাচন। সেই নির্বাচন মিটতেই দলের অন্দরে যা যা পরিবর্তন দরকার, তা তিনি করবেন। তার আগে দলের সংগঠন আমূল বদলে দেওয়া সম্ভব নয়। সভাপতি নির্বাচনের ব্যাপারটি যে দল গুরুত্ব দিয়েই দেখছে, সেটা বোঝাতে শনিবারই কংগ্রেসের সব সাধারণ সম্পাদক, রাজ্যস্তরের নেতাদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন তিনি। সোনিয়া নাকি বিক্ষুব্ধ নেতাদের বলেছেন, “আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে দলের অভ্যন্তরীণ নির্বাচন শেষ হবে। তারপরই আমি যা বলার বলতে পারব।”
[আরও পড়ুন: ‘আশা করি রাজ্য সরকার দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেবে’, রামপুরহাট কাণ্ডে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী]
সোনিয়ার তুলনায় কম সক্রিয় হলেও রাহুল গান্ধীও (Rahul Gandhi) গত কয়েকদিনে একাধিক বৈঠক করেছেন। প্রথমে তিনি বৈঠক করেন দলের হরিয়ানার নেতাদের সঙ্গে। তারপর গুজরাটের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন। রাহুল। তবে সবটাই ভোট নিয়ে।