সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের মন্তব্য থেকে সরে এলেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। কয়েক দিন আগেই তিনি মন্তব্য করেছিলেন, বিজেপির (BJP) যদি কোনও প্রতিপক্ষ থেকে থাকে তাহলে সেটা কংগ্রেস (Congress)। আঞ্চলিক দলগুলিকে কটাক্ষ করে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি বলেছিলেন, ‘‘আঞ্চলিক দলগুলির কোনও নীতি বা আদর্শ নেই।’’ কিন্তু এবার রাহুল দাবি করলেন, তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বিজেপিকে হারাতে গেলে সম্মিলিত লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই যেতে হবে।
আপাতত লন্ডনে (London) রয়েছেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। শুক্রবার সেখানকার ‘আইডিয়াস ফর ইন্ডিয়া’ (Ideas for India) আলোচনাচক্রে যোগ দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ”আমি উদয়পুরে এটাই বলতে চেয়েছিলাম যে, আমার মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।” পাশাপাশি বিরোধীদের প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ”আমরা আমাদের বিরোধী বন্ধুদের সঙ্গে সমন্বয় করেই চলতে চাই। আমি মোটেই কংগ্রেসকে ‘বিগ ড্যাডি’ (বড় দাদা) হিসেবে দেখতে চাই না। বরং বিরোধীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই এগোতে হবে।”
চিন্তন শিবিরের শেষ দিনে ঠিক কী বলেছিলেন তিনি? ওইদিন রাহুল গান্ধী দাবি করেন, বিজেপিকে হারাতে পারে একমাত্র কংগ্রেসই। কোনও আঞ্চলিক দল নয়। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইটা আদর্শের। আর আঞ্চলিক দলগুলির কোনও আদর্শ নেই। বিজেপিকে হারাতে হলে তাই কংগ্রেসকে কংগ্রেসের মতো করেই লড়তে হবে। মানুষের কাছে যেতে হবে।
রাহুলের বক্তব্যের পরই একের পর এক কড়া প্রতিক্রিয়া দেয় তৃণমূল কংগ্রেস, আরজেডি, জেএমএম-সহ একাধিক বিজেপি বিরোধ অঞ্চলিক দল। ইউপিএ-র শরিক দল জেএমএম নেতা ও ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বক্তব্য ছিল, “নিজের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা আছে রাহুল গান্ধীর। কিন্তু নীতি-আদর্শ নিয়ে এমন মন্তব্য করার অধিকার তাঁকে কে দিয়েছে। নীতি-আদর্শ ছাড়াই আমরা এতদিন দল চালাচ্ছি নাকি?” তৃণমূলের (TMC) মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে লেখা হয় “কংগ্রেসই যে বিজেপির আসল বিরোধী, সেটা এখন আর মানুষ বিশ্বাস করেন না। মানুষ নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বিরোধী মুখ। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস কার্যত অপাংক্তেয়।”
বিরোধীদের এহেন সম্মিলিত আক্রমণের পরে এবার একেবারেই ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছে রাহুলের মুখে। তবে এরই পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দেশীয় রাজনীতিতে আরএসএসের সঙ্গেই কংগ্রেসের আদর্শগত লড়াই চলছে। তবে মুখে এমন কথা বললেও রাহুল অনুষ্ঠানের যে ছবিগুলি টুইট করেছেন, তার মধ্যে রয়েছে এমন একটি ছবি যেখানে তাঁকে মহুয়া মৈত্র থেকে সীতারাম ইয়েচুরি, তেজস্বী যাদবের মতো বিরোধী নেতাদের পাশে দেখা গিয়েছে। যা আরও একবার বুঝিয়ে দেয়, বিরোধীদের গুরুত্ব দিয়ে তাদের সঙ্গে নিয়েই পথ চলতে হবে সেকথা ভালই বুঝেছেন রাহুল।