সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশাত্মবোধ! যে ‘দোষে’ ফাঁসি হয়েছিল ক্ষুদিরাম বসু, ভগৎ সিংয়ের মতো স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। সেই ‘দেশাত্মবোধ’ বর্তমান ভারতীয় রাজনীতির ‘গরম মশলা’। ক্ষমতার রান্নায় যা না দিলেই নয়। ফলে লোকসভা নির্বাচনের আগেভাগে I.N.D.I.A. নামকরণে চমক দিয়েছে বিরোধী জোট। এবার রাতারাতি দেশের নাম বদলে ফেলার অভিযোগ উঠল শাসক পক্ষের বিরুদ্ধে। আসলে জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির তরফে যে আমন্ত্রণপত্র তৈরি হয়েছে, সেখানে ইংরেজিতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র (President of India) পরিবর্তে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ (President of Bharat)। যা নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক তর্জা শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে রাইসিনা হিলের তরফে রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর আয়োজিত সম্মেলনের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন। সেখানেই লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে ওই হাই প্রোফাইল পত্রের প্রতিলিপি। এই ঘটনায় সরব হয়েছে কংগ্রেস-সহ (Congress) একাধিক বিরোধী দল।
[আরও পড়ুন: ‘ইহুদি নিধনের মতোই..’, সনাতন ধর্ম মন্তব্যে স্ট্যালিনপুত্রকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা বিজেপির]
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh) টুইট করেছেন, এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর উপরে আঘাত। লিখেছেন, “খবর তাহলে সত্যি। ৯ সেপ্টেম্বর আয়োজিত জি-২০ সম্মেলনের নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে রাষ্ট্রপতি ভবন। তাতে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’ লেখা হয়েছে।” আরও লেখেন, “সংবিধানের ২ নং অনুচ্ছেদে সাফ বলা রয়েছে, ‘ভারত অর্থাৎ ইন্ডিয়া, রাজ্যের সমষ্টি হিসেবে বিবেচিত হবে’। কিন্তু সেই যুক্তরাষ্ট্রের উপরই আঘাত হানা হচ্ছে।”
দেশের নাম বদলের জল্পনায় সরব হয়েছেন INDIA জোটের অন্যতম মুখ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, “দেশের নামও কি বদলে যাবে এবার! গোটা বিশ্ব ভারতকে চেনে ‘ইন্ডিয়া’ নামে। কিন্তু রাষ্ট্রপ্রতির আমন্ত্রণপত্রে তা বদলে দেওয়া হয়েছে।” অপরপক্ষে ‘ভারত’-এর হয়ে ব্যাটন ধরেছে বিজেপি। এই বিষয়ে টুইট করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা (Himanta Biswa Sarma)। তাঁর কথায়, “ভারতীয় প্রজাতন্ত্র- আমাদের সভ্যতা দৃঢ় পদক্ষেপে অমৃতকালের দিকে এগোচ্ছে দেখে আনন্দ হচ্ছে, গর্ববোধ করছি।”
[আরও পড়ুন: পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ, মণিপুরে সরকারের নিশানায় সংবাদমাধ্যম]
উল্লেখ্য, ‘ইন্ডিয়া’ নয় ‘ভারত’কে আনুষ্ঠানিকভাবে হিন্দু রাষ্ট্র করতে বদ্ধপরিকর আরএসএস (RSS)। তারা সব সময় ভারতের পক্ষে। চলতি মাসেই নাগপুরের এক সভায় সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত বলেন, সমস্ত ভারতীয় হিন্দু এবং ভারত হিন্দুত্বের প্রতিনিধিত্ব করে। ‘তরুণ ভারত’ নামে একটি দৈনিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সঙ্ঘ প্রধান। কিছুদিন আগেই লাদাখ মাটিতে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছিলেন, বিজেপি সরকার চালাচ্ছে আরএসএস। দেশের সবকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আরএসএসের লোক বসে আছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, ‘ভারত’ নামকরণও সংঘেরই এজেন্ডা। এবার তা বাস্তবায়িত করতে চলেছে মোদি সরকার।