স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: ‘ক্রাউড ফান্ডিংয়ে’র পর এবার ‘ক্রাউড আইডিয়া’র পথে কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনে ইস্তেহারে কী কী বিষয় থাকা উচিত, তা জানতে ওয়েবসাইট ও ইমেল আইডি প্রকাশ করল দেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘আওয়াজ ভারত কী’। এই ওয়েবসাইট ও ইমেল আইডিতে নিজেদের মতামত জানাতে পারবেন দেশের আমজনতা। সবশেষে তার থেকে বিষয়, দাবি মেনে তৈরি হবে কংগ্রেসের ঘোষণাপত্র। যা আদতে হবে ‘জনগণের ঘোষণাপত্র’। বুধবার দলীয় সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলনে এই ঘোষণা করেন কংগ্রেসের ম্যানিফেস্টো কমিটির চেয়ারপার্সন পি চিদম্বরম।
ইতিমধ্যেই আসন্ন লোকসভা নির্বাচন, রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) নেতৃত্বাধীন ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার জন্য ‘ডোনেট ফর দেশ’ শীর্ষক ক্রাউড ফান্ডিং চালু করেছে কংগ্রেস (Congress)। এবার নির্বাচনে ইস্তেহারে মতামত চেয়ে শুরু হল ‘ক্রাউড আইডিয়া’। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, এর মাধ্যমে নিজেদের দাবিদাওয়া তুলে ধরতে পারবেন দেশের সাধারণ মানুষ। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসলে দেশবাসীকে নিজেদের কাছে টানাও এর পিছনে অন্যতম কারণ।
[আরও পড়ুন: সমরশক্তিতে শীর্ষে আমেরিকা, তালিকায় কত নম্বরে ভারত ও চিন?]
এমনিতে, সামনেই নির্বাচন। জনসংযোগ বাড়াতে নিচু তলার কর্মী-সমর্থকদের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে রেখেছে হাইকমান্ড। এবার ‘আওয়াজ ভারত কী’র মাধ্যমে জেনেক্সকে নিজেদের আরও কাছাকাছি আসার মাধ্যম করে দিচ্ছে কংগ্রেস। তাছাড়া এইভাবে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বার্তা থেকে সাধারণ মানুষের চিন্তাভাবনারও কিছুটা আন্দাজ পাওয়া যাবে বলে মনে করছে কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব। ওয়েবসাইট ও ইমেল আইডি প্রকাশ করে চিদম্বরম বলেন, “ঘরের কোণায় বসে নয়, আমরা চেয়েছি আমাদের ইস্তেহার বা ঘোষণাপত্র তৈরি হোক মানুষের মতামত নিয়ে।” এদিন ওয়েবসাইট (awaazbharatki.in) এবং ইমেল আইডি (awaazbharatki@inc.in) ঘোষণা করা হয়।
[আরও পড়ুন: জন্মের প্রমাণপত্র হিসাবে গ্রহণযোগ্য নয় আধার! বড় সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের]
শুধু অনলাইন মতামত জানতে চেয়েই অবশ্য বসে থাকছে না কংগ্রেস। প্রতি রাজ্যে এই সংক্রান্ত অন্তত একটি করে আলোচনাসভার আয়োজন করবে কংগ্রেস। যেখানে সাধারণ মানুষের বক্তব্য শোনা হবে। এই সভায় কি ‘ইন্ডিয়া’ শরিকদেরও ডাকা হবে? জবাবে চিদম্বরম জানান, “প্রত্যেকেই এই সভায় আমন্ত্রিত। তবে শরিকদের সঙ্গে ইস্তেহার সংক্রান্ত আলোচনা দলের সভাপতি করবেন। সেটা অন্য বিষয়।” মোদ্দা কথা হল, এই ইস্তেহার শুধুমাত্র কংগ্রেসের। এর সঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র বা তার অভিন্ন ন্যুনতম কর্মসূচির কোনও সম্পর্ক নেই। কংগ্রেসের এই কর্মসূচির আরও একটি দিক বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ। বিরোধীদের জোটের নাম ‘ইন্ডিয়া’ (INDIA) রাখতেই বিজেপি ও কেন্দ্র সরকার হঠাৎ করে দেশের ইংরাজি নামকে ত্যাগ করে ‘ভারত’ নামে জোর দেওয়া শুরু করেছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই কর্মসূচিতে ‘ভারত’ ব্যবহার করা হয়েছে বলে কংগ্রেস সুত্রের খবর। অর্থাৎ ‘আওয়াজ ভারত কী’, কর্মসূচির সঙ্গে যাতে ‘ইন্ডিয়া’ শরিকদের থেকে নিজেদের স্বতন্ত্র রাখা যায়, একইসঙ্গে বিজেপির একাধিপত্যেও আঘাত হানা যায় এই জোড়া লক্ষ্যেই ‘ভারত’ ব্যবহার করেছে কংগ্রেস।