লালকেল্লাকে রাজনীতির মঞ্চ বানিয়েছেন, পরিবারতন্ত্র নিয়ে মোদির খোঁচার পালটা দিল কংগ্রেস

03:47 PM Aug 15, 2022 |
Advertisement

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে উন্নয়নের লক্ষ্যে সংকল্পের কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। পাশাপাশি পরিবারতন্ত্র ও দুর্নীতির বিরুদ্ধেও সুর চড়ান। বলেন, “দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্র জমজ শত্রু। যার মুখোমুখি হয়েছে দেশ। এর থেকে মুক্তি পেতে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে”। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেন্দ্র কঠোর পদক্ষেপ করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন। যদিও প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে পরিবারতন্ত্র নিয়ে সরব হওয়াকে রাজনৈতিক বিবৃতি হিসেবেই দেখছে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, মোদি লালকেল্লাকেও রাজনৈতিক মঞ্চে হিসেবে ব্যবহার করেছেন।

Advertisement

৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে পাঁচ সংকল্পের কথা উল্লেখ করেন মোদি। বিকশিত ভারত, দাসত্ব থেকে মুক্তি,  উত্তরাধিকার নিয়ে গর্ব, ঐক্য এবং নাগরিক কর্তব্যের কথা বলেন তিনি। আগামী ২৫ বছর এই পাঁচ ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি কংগ্রেসের নাম না করে পরিবারতন্ত্র নিয়ে তোপ দাগেন। বলেন, “পরিবারতন্ত্র দেশের প্রতিষ্ঠানগুলিকে দুর্বল করেছে, প্রচুর দুর্নীতির ঘটনা সামনে আসছে। দুর্নীতির ঘুণে ক্ষয়ে যাচ্ছে দেশ।” প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, পরিবারতন্ত্রের ফলেই দুর্নীতির এত রমরমা। তাঁর কথায়, “আমাদের দেশকে এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে…দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই হবে। দুর্নীতি ও দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষ- দুই থেকেই সতর্ক থাকতে হবে আমাদের।”

[আরও পড়ুন: মহাকাশে ‘জয় হে’, মাটি থেকে ৩০ কিলোমিটার উঁচুতে উড়ল তেরঙ্গা]

সোমবার সকাল ৭টা ৩৩ মিনিটে লালকেল্লায় ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণের শেষলগ্নে পরিবারতন্ত্র, স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতি নিয়ে কড়া বার্তা দেন। মোদি জানান, পরিবারতন্ত্র শুধুমাত্র রাজনীতিতে নয়, একাধিক প্রতিষ্ঠানেও ছড়িয়ে রয়েছে। আমাদের বহু প্রতিষ্ঠান পরিবারতন্ত্রের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই কারণেই যোগ্য প্রতিভারা সুযোগ পান না। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলিকে রক্ষা করতে পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে কাজ করতে হবে।” মোদির ভাষায়, “পরিবারের মঙ্গলের সঙ্গে দেশের মঙ্গলের কোনও সম্পর্ক নেই। আসুন আমরা সকলে মিলে রাজনীতি ও প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিবারিক শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করি।”

মোদির এই ভাষণ নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য, পবিত্র দিনেও লালকেল্লার মঞ্চকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কংগ্রেস নেতা পবন খেড়া বলেন, “দেশের স্বাধীনতা দিবস রাজনীতি করার দিন নয়, যদিও সেই পরম্পরা বদলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।” এদিকে স্বাধীনতা দিবসের বিবৃতিতে সোমবার সরাসরি মোদি সরকারকে তোপ দাগেন কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। সোনিয়া দাবি করেন, নিজেদের প্রচারের স্বার্থে পরিকল্পিতভাবে মহাত্মা গান্ধী (Mahatma Gandhi), জওহরলাল নেহরুর মতো দেশনেতাদের অপমান করা হচ্ছে। কংগ্রেস সভানেত্রীর কথায়, “গান্ধী-নেহরু-আজাদ-প্যাটেলকে অপমান করতে উগ্র জাতীয়তাবাদী সরকার ইতিহাস বিকৃত করছে। কংগ্রেস এর তীব্র নিন্দা করছে।”

[আরও পড়ুন: ‘গান্ধী-নেহরুকে অপমানই উদ্দেশ্য এদের’, স্বাধীনতা দিবসের বিবৃতিতে কেন্দ্রকে তোপ সোনিয়ার]

স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মহাত্মা গান্ধী ও বিনায়ক দামোদর সাভারকরকে একাসনে বসান মোদি! তা নিয়েও শুরু হয়েছে বিতর্ক। উল্লেখ্য, গতকালই তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন টুইট করেন, “স্বাধীনতা দিবস আমাদের আবেগ, জাতীয় পতাকা আমাদের গর্ব। কিন্তু আমরা সাভারকর অথবা গডসেকে পুজো করতে পারব না।” 

Advertisement