বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ভারত ন্যায় যাত্রা বাংলায় ঢুকলে তাতে পা মেলাতে তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস। শুক্রবার দলের এক শীর্ষনেতা জানান, ১৪টি রাজ্যের উপর দিয়ে ভারত ন্যায় যাত্রা যাবে। যখন যে রাজ্যের উপর দিয়ে যাবে তখন সেই রাজ্যের ‘ইন্ডিয়া’ জোটে শামিল হওয়া দলকেও আমন্ত্রণ জানান হবে। সেক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে বাংলায় তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানান হবে বলে জানান তিনি। বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার দফায়-দফায় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেখানে যেমন ন্যায় যাত্রার পথ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তেমনি কোন রাজ্যে কোন দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা হতে পারে তা নিয়েও কথা বলছে কংগ্রেসের ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স কমিটি। আগামী চার তারিখের মধ্যে এই কমিটি প্রতিটি রাজ্যে জোট পরিস্থিতির রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
ভারত জোড়ো যাত্রায় দেশের সমস্ত বিজেপি বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানায় কংগ্রেস। এবারও ব্যতিক্রম হচ্ছে না। ইন্ডিয়া জোটের শরিরকদের আমন্ত্রণ জানাবে কংগ্রেস। বাংলায় তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও বামেদের ক্ষেত্রে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে এআইসিসির তরফে জানান হয়। দলের রাজ্যসভার এক সাংসদ এদিন জানান, যেহেতু ভারত ন্যায় যাত্রার পথে বেশ কয়েকটি রাজ্যে বামেদের কিছুটা হলেও অস্তিত্ব আছে তাই বামেদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে যোগ দিতে বলা হবে। তিনি জানান, ৪ জানুয়ারি যাত্রা পথ ও ৭ তারিখ থিম সং প্রকাশ করা হবে।
[আরও পড়ুন: জ্বলবে টানা দেড় মাস, অযোধ্যায় রথে চেপে আসছে অতিকায় গোবরের ধূপ]
আবার লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে সক্রিয়া হলো কংগ্রেস। সমস্ত রাজ্যের প্রদেশ নেতৃত্বের মতামত নেন মল্লিকার্জুন খাড়গে ও রাহুল গান্ধী। এবার পরিষদীয় দলনেতাদের সঙ্গে কথা বলতে গঠন করা হয়েছে ন্যাশনাল এলায়েন্স কমিটি। কংগ্রেস কর্ম সমিতির সদস্য ও এআইসিসির সাধারন সম্পাদক মুকুল ওয়াসনিকের নেতৃত্বে কমিটি সদস্যরা রাজ্য ধরে ধরে আলোচনা শুরু করেছেন। বৃহস্পতিবার নাগপুরে বাংলায় জোট পরিস্থিতি নিয়ে অধীর চৌধুরি ও দীপা দাসমুন্সির সঙ্গে কথা বলেন কমিটি সদস্যরা। কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যেহেতু জাতীয় স্বার্থে জোট গঠন হয়েছে তাই রাজ্যস্তরে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি জাতীয়স্তরের নেতৃত্বেও আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
রামমন্দির উদ্বোধনে যোগ দেওয়া নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে পারল না কংগ্রেস। দলের তরফে সোনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে বা অধীর চৌধুরীর যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। যেখানে মন্দির উদ্বোধনে যোগ দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস তখন দলের বর্ষীয়ান নেতা শ্যাম পিত্রোদার মন্তব্য নিয়ে বিরক্তি গোপন করল না কংগ্রেস। সম্প্রতি তিনি জানান, বেকারত্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্যর তুলনায় মন্দির স্থাপনকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ তৈরি করে গণতন্ত্রকে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পিত্রোদার কড়া সমালোচনা করে গেরুয়া শিবির। উঁনি মানুষের ভাবাবেগে আঘাত করছেন বলে জানান কেন্দ্রীয়মন্ত্রী মীনাক্ষি লেখি। এর পরেই কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ জয়রাম রমেশ জানান, পিত্রোদার বক্তব্য সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত। কংগ্রেসের নয়।