স্টাফ রিপোর্টার: সিপিএমের তরুণ নেতা রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে৷ ঘটনার সূত্রপাত গত ১২ ফেব্রূয়ারি৷ সেদিন শিলিগুড়িতে ডার্বি ম্যাচ দেখতে যান ঋতব্রত৷ দর্শক আসনে বসা তাঁর একটি ছবি পোস্ট হয় ফেসবুকে৷ সেই ছবিকে কেন্দ্র করে বিতর্কের শুরু৷ ওই ছবি পোস্ট হওয়ার পর ঋতব্রতর হাতের ঘড়ি ও পকেটের কলমের দাম উল্লেখ করে ওই ব্যক্তি একাধিক প্রশ্ন তোলেন৷ অভিযোগ, এরপরই ওই ব্যক্তির অফিসে একটি মেল পাঠিয়ে তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ঋতব্রত৷ এরপরই বিতর্ক চরম আকার নেয়৷ পার্টির এই দ্বিমুখী অবস্থানে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নের ঝড়৷
(কপ্টারে চেপে বাঘ আসছে রাজ্যে)
যাদবপুরের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র ফেসবুকে একটি কার্টুন পোস্ট করে যখন গ্রেফতার হন, তখন মুক্তচিন্তার পক্ষে সওয়াল করেছিল সিপিএম৷ সরকারকে ‘অসহিষ্ণু’ বলে কটাক্ষ করেছিল তারা৷ হায়দরাবাদের দলিত ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার ঘটনাতেও মুক্তভাবনার কথা শুনিয়েছিলেন স্বয়ং ঋতব্রতই৷ মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএমের ভাবা উচিত কতদিন আর তারা আর ভাবের ঘোরে চুরি করবে৷ একাধিকবার তাদের নেতাদের মুখে শোনা যায় তৃণমূলে গণতন্ত্র নেই৷ কিন্তু এখন তাদের দলের সাংসদের এই কার্যকলাপে যে কদর্য রূপ প্রকাশ পেয়েছে তার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করবে দল৷ এখন এই ঘটনার প্রতিবাদে শহরে আরেকটা মোমবাতি মিছিল হবে কি?”
(‘যে কাজ আমি করিনি তার জন্য ১২ বছর ধরে পেতে হল শাস্তি!’)
প্রশ্ন উঠেছে, নিজের বেলায় এখন কেন সমালোচনা সহ্য করা যাচ্ছে না৷ কেন এই অসহিষ্ণুতা৷ কেন এই দ্বিচারিতা৷ কেন নিছক একটি পোস্টের জন্য একজনের চাকরি খেয়ে নেওয়ার উপক্রম করা হচ্ছে? জানা গিয়েছে, যে ব্যক্তি ফেসবুকে এই মন্তব্য করেছিলেন ওই ব্যক্তির অফিসের এইচআর বিভাগের এক আধিকারিককে মেল করেন ঋতব্রত৷ মেলে তিনি এবিষয়ে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগও জানান৷ সেই মেলের স্ক্রিনশটও ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়৷ অভিযোগ, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করায় দিল্লির সংশ্লিষ্ট থানায় ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোরও হুঁশিয়ারি দেন৷ যদিও সেই মেলের সত্যতা যাচাই করেনি ‘সংবাদ প্রতিদিন’৷ যিনি ওই মন্তব্য করেছিলেন তিনিও একজন সিপিএম সমর্থক৷ পাল্টা পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনিও৷ এই ঘটনায় দিল্লি ও রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ঋতব্রতর নামে অভিযোগ পাঠিয়েছেন৷ দল থেকে কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারির কাছে এবিষয়ে তিনি অভিযোগ জানাবেন বলে খবর৷ সোশ্যাল মিডিয়াতেই এপ্রসঙ্গে মত দিয়েছেন, পলিটব্যুরোর সদস্য তথা দলীয় সাংসদ মহম্মদ সেলিম৷ তাঁর মন্তব্য, “আধুনিক যুগে আলোচনা-সমালোচনার একটা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম৷ সেখানে করা কোনও মন্তব্যের ভিত্তিতে কারও চাকরি কেড়ে নেওয়া বামপন্থী মানসিকতার পরিচয় নয়৷ রাজ্য কমিটি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে৷ একজন সিপিএম সাংসদের কাছ থেকে এটা প্রত্যাশিত নয়৷” যদিও ওই বিতর্কিত পোস্ট সম্বলিত ছবিটি ডিলিট করে দিয়েছেন ঋতব্রত৷ এপ্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এবিষয়ে আমার কিছু জানা নেই৷”
The post ঋতব্রতর ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক, পার্টির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন appeared first on Sangbad Pratidin.