বাবুল হক, মালদহ: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মালদহ জেলাজুড়ে একাধিক অঞ্চল সভাপতি বদল হয়েছে। আবার দায়িত্বে বহাল রয়েছেন পুরনো অনেকে। তা সত্ত্বেও জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে নানারকম অভিযোগ আসছে। সেই কারণেই ফের অঞ্চল সভাপতিদের ‘সতর্ক’ করলেন মালদহের তৃণমূল জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি। তাঁর সাফ কথা, “ব্লক সভাপতিরা সংশ্লিষ্ট এলাকার দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সিদ্ধান্ত নেবেন অঞ্চল সভাপতিদের বিষয়ে। দলে অলসদের কোনও জায়গা নেই। পচা আলুদের দলের কোনও পদে রাখা যাবে না।”
মালদহের (Malda) মালতিপুরের সামসিতে তৃণমূলের তরফে এক কর্মিসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই কয়েকটি অঞ্চলের ‘অলস’ দলীয় সভাপতিদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি। এনিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে মালদহের বেশকয়েকটি ব্লকে তৃণমূলের নিচুস্তরের অশান্তি আরও তীব্রতর হতে পারে বলে জেলার রাজনৈতিক মহল মনে করছে। জেলা তৃণমূল সভাপতির এই ধরনের হুঁশিয়ারি নিয়ে অবশ্য প্রকাশ্যে দলের কোনও অঞ্চল সভাপতি মুখ খুলতে চাননি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উত্তর মালদহের একটি ব্লকের তৃণমূল সভাপতির কথায়, “দলটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। কাউকে স্বার্থের জন্য চেয়ারে বসাবেন আর একনিষ্ঠ কর্মীদের সরিয়ে দেবেন, এটা আর বেশিদিন চলবে না। তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে সব খবর রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: মেলেনি শৌচাগার! ‘দিদির দূত’ শতাব্দীর সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মহম্মদবাজারের মহিলারা]
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের দ্বন্দ্ব দূর করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের কর্মিসভার মঞ্চ থেকে সেই বার্তাই দিয়েছেন মালতিপুরের বিধায়ক তথা দলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সি। মালদহের তৃণমূল সভাপতি স্পষ্ট বলেন, “কাজ না করলে দলে জায়গা নেই। যদি দেখা যায়, কোনও অঞ্চল কমিটির সভাপতি কিংবা চেয়ারম্যান সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন না, তাহলে সেই সভাপতি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। ব্লক সভাপতিরা বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে ঠিক করে নেবেন, এই ধরনের সভাপতিদেরকে রাখা যাবে কি না। আপনি এক বস্তা আলু বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন। তার মধ্যে দু’টো আলু পচে গিয়েছে। চারদিন পর দেখবেন, ওই দু’টো আলু অর্ধেক বস্তা আলু পচিয়ে দিয়েছে। প্রথমেই পচা আলু বের করে দিলে বস্তার অর্ধেক আলু পচত না। যাঁরা দলের কাজ করছেন না, তাঁদের নাম কমিটি থেকে বাদ দিয়ে দিন। অলস মানুষের জায়গা তৃণমূলে নেই।” পরে এক প্রশ্নের উত্তরে আবদুর রহিম বক্সি বলেন, “আমরা কিছু কর্মীকে লক্ষ্য করছি, তাঁরা দলের মধ্যে থেকেও দলের কাজ করছেন না। তাঁদের উদ্দেশ্যে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বলেছি।”