shono
Advertisement

হকি বিশ্বকাপে বিতর্কে ভারতীয় তারকারা, ভুল স্বীকার করলেন মনপ্রিত

ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের করে দেওয়া হল ভারতীয় অধিনায়ককে।
Posted: 10:03 AM Dec 13, 2018Updated: 10:03 AM Dec 13, 2018

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বড়সড় বিতর্কের মুখে পড়তে যাচ্ছিল ভারতীয় হকি দল। কোনওমতে সামাল দিলেন ভারতীয় অফিসিয়ালরা। না হলে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে অধিনায়ক-সহ দলের ক’জন তারকাকে সাসপেনশনের মুখে পড়তে হত।

Advertisement

মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডস এবং কানাডার মধ্যে ক্রসওভার ম্যাচে হঠাৎই ভিআইপি লাউঞ্জে দেখা গেল ক’জন ভারতীয় তারকাকে। সেলফি তোলা এবং অটোগ্রাফ দেওয়া শুরু করতেই ওঁদের দিকে নজর গেল অফিসিয়ালদের। সঙ্গে সঙ্গে ওঁদের উদ্দেশ্যে চিৎকার। বলা হল, এই মুহূর্তে যেন সবাই লাউঞ্জ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তারকারাও দ্রুত সেসব মেনে বেড়িয়ে গেলেন। এবার বিতর্কটা হল এসবের পর। বিশ্বকাপ হকির নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ম্যাচ চলাকালীন ভিআইপি লাউঞ্জে অন্য দলের খেলোয়াড়দের ঢোকার অনুমতি নেই। যদি ঢোকেন, এবং সেই নিয়ে কেউ আপত্তি করেন, তা হলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। যেমনটা হয়েছে পাকিস্তানের ক্ষেত্রে। ব্যাপারটা বুঝেই ভারতীয় তারকারা দ্রুত সেখান থেকে বেরিয়ে যান।

[কানাডাকে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ভারত]

কিন্তু পাশাপাশি এই প্রশ্নও উঠে এল- যেরকম বিচ্ছিরি ভঙ্গিতে হকি অফিসিয়ালরা ওঁদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করলেন, সেটা কতখানি ভদ্রোচিত ছিল? এই নিয়ে বুধবার হকি ইন্ডিয়ার তরফে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কোনও তারকার উদ্দেশ্যে চিৎকার করা হয়নি। ওঁদের যাঁরা ডেকে ভিআইপি লাউঞ্জে এনেছেন, চিৎকার তাঁদের উদ্দেশ্যে। কারণ, ওঁরা জানেন না এতে কী ভয়ানক বিপদ হতে পারে। বুধবার বিকেল চারটেয় এই নিয়ে আলাদা সাংবাদিক সম্মেলনও হল। যাতে ভারতীয় অধিনায়ক মনপ্রিত সিং বললেন, “এটা একেবারেই আমাদের ভুল। আমরা সবাই জানতাম, এতে বড় শাস্তির মুখে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। অফিসিয়ালরা নির্দোষ।” কেন এটা বললেন, তার সঠিক জবাব মেলেনি। তবে গ্রহণযোগ্য উত্তর হল, মনপ্রিতের মুখ দিয়ে হকি কর্তারা কথাটা বলিয়ে দিলেন। যাতে তাঁদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন না ওঠে।

ভাবা যেতে পারে, নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে কঠিন ম্যাচের আগে এ কেমন বিপত্তি? মনপ্রিত অবশ্য বললেন, এসব নিয়ে তাঁরা ভাবছেন না। “খালি হাতে ফিরব না!” বললেন অধিনায়ক মনপ্রিত। এতটা জোর কী করে এল, সেটা প্রশ্ন। তবে কোচ হরেন্দ্র সিংয়ের সঙ্গে মনপ্রিতের বক্তব্য মিলে যাওয়ার অর্থ, ইতিমধ্যেই দলের সবার কাছে ম্যাচ সংক্রান্ত বিষয়ে সব খুঁটিনাটি ‘ব্রিফ’ করা হয়ে গিয়েছে। “পঁচিশ শতাংশ সুযোগও নষ্ট করা চলবে না। সে গোল করার হোক, বা পেনাল্টি কর্নারের। আবার ওদেরও সুযোগ দেওয়া যাবে না। এই প্রস্তুতি তো একদিনের নয়। ছ’মাস আগে আমরা জানতাম কবে কার সঙ্গে খেলা। এই কোয়ার্টার ফাইনালও প্রত্যাশিত। চমকের ব্যাপার নেই।” হুবহু একই কথা একটু ঘুরিয়ে এদিক-ওদিক করে বললেন হরেন্দ্র এবং মনপ্রিত।”

১৯৭৫-এ শেষবার বিশ্বকাপ হকির সেমিফাইনালে খেলেছিল ভারত। এবার হলে ৪৩ বছর পর আবার হবে। হরেন্দ্র বলছিলেন, “যেভাবে এতদিন নিজেদের প্রস্তুত করেছি, তার থেকে আলাদা কিছু করার প্রশ্ন নেই। আর ১৯৭১ থেকে এই ২০১৮, বিশ্ব হকির বেসিক হল পেনাল্টি কর্নার। এটা আমাদের মাথায় আছে। এই চ্যালেঞ্জ নিতে আমরা প্রস্তুত। নেদারল্যান্ডসও আক্রমণাত্মক খেলে, আমরাও। সেভাবেই খেলা হবে। বলতে পারেন, এই জায়গায় ভারসাম্য থাকছে।” পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করতে না পারা ভারতের অন্যতম দুর্বলতা। কিন্তু, সেই দৌড়ে প্রতিপক্ষই বা কম পিছিয়ে কোথায়? গোটা টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত ২৩টা পিসি পেয়ে চারটের বেশি গোল করেনি নেদারল্যান্ডস। তবে হরেন্দ্রের বক্তব্য, “কিন্তু, অতগুলো তো আদায় করেছে। সেটাও ভাবতে হবে।”

দর্শক সমর্থন অবশ্যই ভারতের অ্যাডভান্টেজ। তবে সেটা চাপেরও, এমনই মত নেদারল্যান্ডস কোচের। ফিটনেস নিয়ে ভারতের কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু, নেদারল্যান্ডসের আছে। কানাডা ম্যাচে চোট পেয়ে বিশ্বকাপের বাইরে চলে গেলেন নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার সান্ডার ডি উইজিন। বুধবার দু’টো কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ হয়। একটায় ইংল্যান্ড ৩-২ গোলে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে সেমিতে গেল। অন্যটায় অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে গেল ফ্রান্সকে ৩-০ হারিয়ে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement