কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভ ঘিরে উত্তপ্ত সল্টলেকের (Salt Lake) বিদ্যুৎ ভবন। শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ তুলতে পুলিশের লাঠিচার্জের পর অশান্তি আরও ছড়িয়ে পড়ে। রাতে বিদ্যুৎ ভবনে আটকে থাকা কয়েকজন কর্মী, আধিকারিককে নিরাপদে বের করে আনার জন্য বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, গভীর রাতে ৪১ জন বিদ্যুৎ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে বিধাননগর পূর্ব থানা। এঁদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার বিধাননগর আদালতে পেশ করা হবে তাঁদের।
পুলিশের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য চুক্তিভিত্তিক ও ঠিকাকর্মী ঐক্যমঞ্চের কলকাতার নেতা দিগন্ত আচার্যের অভিযোগ, রাতে পুলিশের লাঠিতে তাঁদের তিন কর্মী জখম হয়েছেন। বিনা প্ররোচনায় লাঠি চালিয়েছে পুলিশ। ঐক্যমঞ্চের তরফে তন্ময় ঘোষাল জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হলে এবং পুলিশের লাঠি চালানোর প্রতিবাদে আন্দোলন তীব্র করা হবে, প্রয়োজনে স্তব্ধ করে দেওয়া হবে রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। এই দাবি জোরদার করতে ফেব্রুয়ারি মাসের ২ এবং ৩ তারিখ রাজ্যব্যাপী কর্মবিরতি পালনের ডাক দিয়েছে ঐক্য মঞ্চ।
[আরও পড়ুন: পরাক্রম নয়, নেতাজির জন্মজয়ন্তীকে কেন দেশনায়ক দিবস বলছে রাজ্য? ব্যাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী]
বেশ কয়েক দফা দাবি নিয়ে শুক্রবার সকাল থেকে সল্টলেক বিদ্যুৎ ভবনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য চুক্তিভিত্তিক ও ঠিকাকর্মী ঐক্য মঞ্চ। দাবিপূরণের কোনও আশ্বাস না পেয়ে পরবর্তী সময়ে তাঁরা বিদ্যুৎ ভবনের নিচে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভের মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু গভীর রাতে পুলিশ সেই বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরই প্রতিবাদে আরও বড় আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন অস্থায়ী কর্মীরা।
[আরও পড়ুন: ভোটের উত্তাপে সুভাষ স্মরণ! ‘পরাক্রম দিবসে’ শহরে মোদি, পথে নেমে ‘দেশনায়ক দিবস’ উদযাপন মমতার]
অবস্থানকারীদের দাবি ঠিক কী? চুক্তিভিত্তিক ও ঠিকাকর্মীদের পক্ষ থেকে দোলন সরকার জানিয়েছেন, ন্যূনতম ২১৬০০ টাকা বেতন দেওয়ার দাবি রয়েছে তাঁদের। শ্রমচুক্তি আইন অনুযায়ী, এই বেতন কাঠামো নির্দিষ্ট করার দাবি তাঁদের দীর্ঘদিনের। সেই দাবি আদায়ে এবার আর পিছু হঠা হবে না। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ শ্রমিকের মর্যাদা দেওয়ার দাবিও রয়েছে ঠিকা কর্মীদের। এছাড়া ৬০ বছর পর্যন্ত চাকরির নিশ্চয়তা, যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে স্থায়ীকরণ-সহ মোট ৮ দফা দাবি নিয়ে শুক্রবার ডেপুটেশন ও জমায়েত কর্মসূচি পালনে বসেছিলেন চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা। মঞ্চের দাবি, বিদ্যুৎ ভবনের তরফে তাঁদের দাবিপূরণের কোনও আশ্বাস এদিন পাওয়া যায়নি।