ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: করোনা এখন ‘অতিমারী’ নয় কলকাতায়। টানা সাতদিন ধরে করোনা সংক্রমণ বা আর জিরো (R0) রেট ০.৬৯ শতাংশ। এটা যেমন স্বস্তির খবর, তেমনই কলকাতায় এক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের হার কমে হয়েছে ২.৮ শতাংশ। অর্থাৎ গড়ে ১০০জনের মধ্যে তিন জনের কম করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন।
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে ইজরায়েলের দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণ, ঘটনাস্থলে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার দল]
কিন্তু কলকাতা মহানগরকে ‘অতিমারী মুক্ত’ এখনই বলছে না রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। কারণ, নিয়ম অনুযায়ী কোনও এলাকা বা রাজ্যকে অতিমারী ক্ষেত্র ঘোষণা করে যেমন কেন্দ্র, তেমনই মুক্ত চিহ্নিত করে সেই কেন্দ্রীয় সরকার। এই ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তীর কথায়, “শুধু কলকাতা নয়, গোটা রাজ্যেই করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) সংক্রমণ ক্রমশ নিম্নমুখী। রাজ্যে সংক্রমণের হার বা (R0) এখন ১.২ শতাংশ। এই সার্বিক চিত্র অত্যন্ত স্বস্তির।” তবে আরও অন্তত বেশ কয়েক মাস এই সতর্কতা বজায় রাখতে হবে। তবেই বোঝা যাবে করোনা ভাইরাস কতটা নিয়ন্ত্রণে।” স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, ভ্যাকসিন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে মাস্ক পরা ও অন্যান্য নিয়ম কঠোরভাবে মানতে হবে।
ঠিক আট মাস আগে কলকাতায় করোনা সংক্রমণ ছিল ১৩-১৪ শতাংশের মধ্যে। এরপরেই উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া এবং হুগলি জেলা। বস্তুত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে থানা ভিত্তিক চিকিৎসককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। করোনা রোগীর খোঁজ পেলে থানা থেকেই স্থানীয় চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বাড়িতে চিকিৎসা সম্ভব না হলে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে। সেইসব ব্যবস্থা এখন কিছুটা কমেছে। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য বলছে,শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে নতুন করোনা রোগীর সংখ্যা ছিলো ২৮৯জন। ৯৭.২০ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়েছেন। রাজ্যের ২০০ টি সেফ হোমে মাত্র ২৪জন উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত রয়েছেন। গত চব্বিশ ঘন্টায় কলকাতায় মাত্র ৯জন করোনা রোগীর হদিশ মিলেছে। মৃত্যু একজনের। আক্রান্ত ব্যক্তিরা বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অবশ্য কলকাতাকে পিছনে ফেলেছে কোচবিহার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, পুরুলিয়া জেলা। এইসব জেলায় গত চব্বিশ ঘন্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ১-৫জনের মধ্যে।
কলকাতা বা উত্তর ও জঙ্গলমহলের জেলায় সংক্রমণ কমলেও উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কিন্তু এখনও রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে রয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী গত চব্বিশ ঘণ্টায় উত্তরে নতুন করে করোনা সংক্রমণ হয়েছে ৪৩ জনের। মৃত্যু হয়েছে ৪জনের। করোনা কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে তাই সেফ হোম কমছে। বেসরকারি হাসপাতালে শয্যা সংখ্যাও কমানো হয়েছে। এদিকে, আগামী সপ্তাহ থেকে কোভ্যাকসিন টিকাকরণ শুরু হবে। কোভ্যাকসিন টিকা দেওয়া হবে রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ থেকে। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর।