অতিমারীতে এদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে। কেউ বা মাকে। কেউ কেউ দু’জনকেই হারিয়ে নিঃস্ব, বিপন্ন। এমন শিশুদের পাশে দাঁড়াতেই ‘সংবাদ প্রতিদিন’ ও ‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ’র মানবিক প্রয়াস ‘আদর’। এমন শিশুদের সন্ধান জানাতে পারেন আপনিও। যোগাযোগ করুন ৯০৮৮০৫০০৪৮ নম্বরে।
শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল : চোদ্দো বছরের শুভ বাবাকে দেখেনি কোনওদিন। মা সন্তানসম্ভবা থাকতেই বিবাগী হয়েছিল পিতৃদেব। ‘সিঙ্গল মাদার’ বন্দনা চক্রবর্তী একার দায়িত্বে বড় করে তুলেছিলেন সন্তানকে। ভাইরাসের ছোবলে শেষ আশ্রয়টাও তছনছ। করোনায় দিনসাতেক ভুগে ইহলোকের মায়া ত্যাগ করেছেন বন্দনাদেবী। একমাত্র সম্বল হারিয়ে অকূল পাথারে নবম শ্রেণীর ছাত্র। কীভাবে চলবে পড়াশোনা? কেই-বা জোগাবে বই খাতার খরচ? জানে না কিশোর। জীবনের শেষতম আলোটা নিভিয়ে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছে কোভিড-১৯ (Covid-19)।
শুভদের বাড়ি ঘাটাল (Ghatal) শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে মনোহরপুর গ্রামে। আদতে যেটা বন্দনাদেবীর বাপের বাড়ি। বছর চোদ্দো আগে স্বামী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তাঁর খোঁজ করেননি বন্দনা। বুঝেছিলেন একাই লড়াই করতে হবে। বাপের বাড়ি চলে এসেছিলেন। পরের বাড়িতে কাজ করে নিজের, আর একমাত্র ছেলের খরচ চালাতেন বন্দনা। স্কুলে ভর্তি করেন শুভকে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরনোর আগেই শুভ শিখে নিয়েছিল পুজোপাঠ পদ্ধতি। পড়াশোনার ফাঁকে এর-তার বাড়ি পুজো করে যা টাকা পেত, মায়ের হাতে তুলে দিত।
[আরও পড়ুন:COVID-19 UPDATE: গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাজয়ী রাজ্যের ৭৩০ জন, নিম্নমুখী মৃত্যু]
গত মে মাসের ঘটনা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে (Corona Second Wave) তছনছ গোটা বাংলা। এক রাতে জ্বর আসে বন্দনাদেবীর। বড় চিকিৎসক দেখানোর সার্মথ্য নেই। গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার দিয়েই চিকিৎসা শুরু হয়। এদিকে বাগে আসছিল না জ্বর। লালা পরীক্ষায় ধরা পড়ে, তিনি করোনা আক্রান্ত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য ছিল না শুভর। কয়েকদিন যমে-মানুষে টানাটানির পর সব চুপ।
গত ৮ মে প্লাস্টিকে মুড়িয়ে যখন দেহটা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, শোকে বিহবল শুভ। আপাতত দিদিমা বিষ্ণুপ্রিয়া রাজপণ্ডিতই তাঁর ভরসা। এদিকে দিদিমারও নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর অবস্থা। মাটির বাড়ি। নড়বড়ে দেওয়াল। সেই বাড়িতে কোনওরকমে নাতিকে নিয়ে দিন গুজরান।
বিধবা বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর দুই মেয়ে তিন ছেলে। কেউ কাছে নেই। সঙ্গী বলতে চোদ্দো বছরের নাতি শুভ। ভাঙাচোরা বাড়ির উঠোনে নাতিকে পাশে বসিয়ে বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী বলেন, শুভ যখন পাঁচ মাসের পেটে, তখন ওর বাবা ছেড়ে পালিয়ে যায়। আর ফেরেনি। বেঁচে আছে কি না তা-ও জানি না। ওঁর মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসারটা বাঁচিয়ে রেখেছিল। সে-ও চলে গেল। আমি এই বৃদ্ধ বয়সে একে নিয়ে কোথায় যাই। এখন ভগবানই ভরসা।” হাপুস নয়নে কেঁদে ফেলেন বৃদ্ধা। অর্থ সাহায্য ছাড়া পড়াশোনা চালানো অসম্ভব। মাঝপথে কি নাতির পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে ? এই একটা প্রশ্নই কুরে কুরে খাচ্ছে দিদিমাকে।
[আরও পড়ুন: Coronavirus: করোনা আনল অন্ধকার, পিতৃহীন সন্তানের জন্য লড়াই শুরু মায়ের]
পাশে চাই আপনাকেও
এই সবহারানো অসহায় শিশুদের পাশে দাঁড়াতে পারেন আপনিও। সরাসরি অর্থসাহায্য পাঠানো যাবে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অ্যাকাউন্টে।
State Bank of India, Ballygunge Branch,
A/C No : 30391077575
IFS Code : SBIN0003951
Mobile : 9433607740 (Debashish Maharaj)
বিঃ দ্র: টাকা পাঠানোর পর আপনার নাম,ঠিকানা ও সাহায্যের পরিমাণ স্ক্রিনশট-সহ হোয়াটসঅ্যাপ করুন 9433607740 ও 9088050048 নম্বরে। আমরা যথাসময়ে তা প্রকাশ করব। সাহায্যকৃত অর্থ 80G ধারা অনুযায়ী করমুক্ত।