shono
Advertisement

করোনা কালে অনাড়ম্বর বিয়ে, চূড়ান্ত সংকটে ক্যাটারিং ব্যবসা

নতুন বুকিং তো দূর অস্ত, গতবছরের বুকিংও বাতিল হয়েছে।
Posted: 12:06 PM May 04, 2021Updated: 12:06 PM May 04, 2021

স্টাফ রিপোর্টার: বাড়ি ভাড়া, ক্যাটারার, নিমন্ত্রণের পর্ব, আলো, সানাই, সবই প্রস্তুত ছিল। কিন্তু সবই এখন বাতিল করতে হয়েছে। যে কোনও অনুষ্ঠানবাড়িতেই ৫০ জন নিমন্ত্রিতের সংখ্যা বাঁধলেও ঝুঁকি নিতে নারাজ বরকর্তা থেকে কনের বাবা, প্রত্যেকেই। “দেখলেন না ত্রিপুরায় কী হল! দরকার কী লোক খাইয়ে বিপদ ডেকে।” সকলেরই এক বক্তব্য। আর বিয়েবাড়িতে এই করোনা আতঙ্কই আজ ভাত কাড়ছে ক্যাটারিং ব্যবসায় যুক্ত মানুষগুলোর।

Advertisement

মে, জুন এবং জুলাই মাসে একগুচ্ছ বিয়ের তারিখ। কিন্তু কোথায় কী! করোনা আবহে চতুর্দিকে চলছে বিয়ে বাতিলের হিড়িক। যেগুলো হচ্ছে সেগুলোও ওই রেজিস্ট্রিতে নমো নমো করে। গত বছরের শেষ দিক থেকে করোনা (Corona Virus) কিছুটা কমায় বিয়ের তারিখ দেখে অনেকেই বিয়ে ঠিক করেছিলেন ছেলে-মেয়ের। কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েই সব ওলটপালট। বাড়িভাড়া থেকে ক্যাটারিং অনেকেরই অ্যাডভান্সের টাকা গচ্চা গিয়েছে। কিন্তু বাতিল হয়েছে বেশিরভাগ বিয়েই। ফলে হাল খারাপ ক্যাটারিংয়ের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লোকজনের। পয়লা বৈশাখের দিন হালখাতা করে ওঁদেরও নতুন বছর শুরু হয়। এপ্রিল থেকে আগস্ট আবার নভেম্বর থেকে মার্চে গোটা বছরের বুকিং আসতে থাকে নতুন খাতার পাতায় পাতায়। কিন্তু এ বছরটা একটা পাতাতেও পেনের আঁচড় পড়েনি। উলটে গতবছরের বুকিংও বাতিল হয়েছে। মালিকের যেমন-তেমন অবস্থা হলেও বাড়িতে হাঁড়ি চড়ছে না সেই ছেলেগুলোর, যাঁরা আমার-আপনার পাতে উৎসব অনুষ্ঠানে মাটন বিরিয়ানি বা চিকেন চাঁপ সাজিয়ে দিয়ে যান। ওঁরা মানে, ছোট বা মাঝারি, ক্যাটারিং সংস্থায় যাঁরা খাবার পরিবেশনের কাজ করেন, তাঁরা।

[আরও পড়ুন: মমতার দুরন্ত জয়ে কর্মসংস্থান-শিল্পোন্নয়ের আশা দেখছে বঙ্গের শিল্পমহল]

বিয়ে, অন্নপ্রাশন, জন্মদিন আগামী বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত একটা বুকিংও নেই ওঁদের। উলটে এবছর মার্চ থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত যে বুকিংগুলো গতবছর করা ছিল সেগুলোও অধিকাংশই বাতিল হয়েছে। গতবছরও একই পরিস্থিতি গিয়েছে। ফলে অনেকেই এই ব্যবসা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। তারিখ মেনে কিছু বিয়ে হচ্ছে গোটা রাজ্যেই। কিন্তু তা রেজিস্ট্রি করে। বড়জোর পুরোহিত এসে মালাবদল আর মন্ত্রোচ্চারণ করাচ্ছেন। কোনওমতে নমো নমো করে চার হাত এক করে দেওয়া। আত্মীয়-পরিজন, পাড়াপড়শি, বরযাত্রী-কনেযাত্রী- এসবই এখন অতীত। নিমন্ত্রিতরাও কে কোথা থেকে কীভাবে অনুষ্ঠানে আসবেন সেই আশঙ্কায় আর নিমন্ত্রণ করছেন না কেউ। যদি কেউ সংক্রমণ নিয়েই ঘুরে বেড়ান! তবে সব মাটি।

যাঁরা গতবছর বুক করেছিলেন এবছর বিয়ের জন্য, তাঁরা প্রত্যেকেই বুকিং বাতিল করছেন। আর নতুন করে আগামী বারের জন্য কেউ বুকও করছেন না। ফলে এক অদ্ভুত সংকটে ক্যাটারিং ব্যবসা। গোটা রাজ্যে কয়েক হাজার মানুষ এই ক্যাটারিং ব্যবসা (Catering Business) চালান। কারও ছোট আবার কারও বা বড়। আবার তাঁদের এই ব্যবসার সঙ্গে অন্তত ২০ থেকে ৩০ জন করে যুক্ত থাকেন। এঁরা অধিকাংশই অনুষ্ঠানপিছু টাকা পান। কাজ নেই তাই আয়ও নেই। এঁরাই পড়েছেন সবথেকে বেশি সংকটে। কেউ একটা অনুষ্ঠানে পান ২০০ টাকা আবার কেউ ৫০০-১০০০ টাকাও। তাঁরা প্রত্যেকেই এখন কর্মহীন।

[আরও পড়ুন: ৬ মে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে বন্ধ থাকবে পানীয় জল সরবরাহ]

শ্যামবাজারের কাছে এক ক্যাটারিং সংস্থার কর্ণধার সুদর্শন নিয়োগী বলছেন, “যিনি বিয়েতে ৫০০-৬০০ নিমন্ত্রিত আয়োজন করেছিলেন, তিনিই এখন ৪০, ৫০ জনের খাবার অর্ডার করছেন। কিন্তু অত কম লোকের আয়োজন করতে গেলে পড়তায় আসবে না। তাই লোকাল কাউকে দিয়ে করিয়ে নিতে বলছি। বা হোটেল থেকে খাবার অনিয়ে নিতে। সারা বছরের ব্যবসা এবারও শেষ হয়ে গেল।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement