কৃষ্ণকুমার দাস: কেন্দ্রীয় সরকারের জোগান পর্যাপ্ত না আসায় প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষ মানুষকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নির্দিষ্ট সময়ে দেওয়া নিয়ে গভীর চিন্তায় কলকাতা পুরসভা।
গাইডলাইন মেনে ৮৪ দিন পরে নির্দিষ্ট সময়ে রাজ্যের ওই সাড়ে ১৪ লাখ মানুষকে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে না বলে এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। কেন্দ্রের তরফে কোভিশিল্ডের (Covishield) জোগানের অপ্রতুলতার কথা জানিয়ে এদিন পুরসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশাসক অতীন ঘোষ জানান, “স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য অনুসারে, বুধবার ৬৭ হাজার নাগরিকের দ্বিতীয় ডোজ প্রাপ্য, কিন্তু পুরসভার কাছে আছে মাত্র ২৫ হাজার টিকা। পরদিন দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য দিন ধার্য হয়েছে ৮৭ হাজার ব্যক্তির, কিন্তু সেদিন কত কোভিশিল্ড কেন্দ্র পাঠাবে তা পুরসভার জানা নেই।” শুধু তাই নয়, শহরে দ্বিতীয় ডোজের ঘাটতি মেটাতে টানা দু’দিন শুক্র ও শনিবার, সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত কোভিশিল্ড টিকা দেওয়া হবে। বিধানসভায় এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার উল্লেখ করে অতীন জানান, কেন্দ্র সময়ে ভ্যাকসিন দিতে না পারলে জানিয়ে দিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই (CM Mamata Banerjee) আগের মতো কিনে সবাইকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেবেন।
[আরও পড়ুন: ‘আপনার মতো হিরো তৃণমূলে একপিসই আছে’, মদনের সঙ্গে ‘রসিকতা’ দিলীপের]
শহরে দ্বিতীয় ডোজ টিকা (Corona Vaccine) প্রাপ্তি নিয়ে সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হতেই এদিন পুরসভায় জরুরি বৈঠকে বসে নাগরিকদের কোভিশিল্ড দেওয়ার দিন ও সময় বদলে দিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। স্বাস্থ্য প্রশাসক জানান, বুধবার প্রথমার্ধে রুটিন মেনে হেল্থ সেন্টারে অন্যান্য টিকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ প্রথমার্ধে কোনও কোভিশিল্ডের টিকা দেওয়া হবে না। দ্বিতীয়ার্ধে শুধুমাত্র দ্বিতীয় ডোজই দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার রুটিন মেনে প্রথমার্ধে দ্বিতীয় ডোজ, দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম ডোজ টিকা হবে। কিন্তু আগামী শুক্র ও শনিবার, দু’দিনই কলকাতার ১৯৪টি সেন্টারেই সকাল দশটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হবে।
তবে ভবানীপুরের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডে কো-অর্ডিনেটর অসীম বসু দু’দিন ধরেই পুর স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ‘দুয়ারে ভ্যাকসিন’ দিতে শুরু করেছেন। রামমোহন দত্ত রোড, চক্রবেড়িয়া নর্থ, অভয় সরকার লেন ও বলরাম বোস ফার্স্ট লেনের যে সমস্ত বাসিন্দা কার্যত শয্যাশায়ী, তাঁদের ঘরে গিয়ে টিকা দিচ্ছেন পুরকর্মীরা। এমনই এক আশি পার হওয়া প্রবীণা মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “বিছানায় শুয়েই ‘দুয়ারে ভ্যাকসিন’ মারফত কোভিডের টিকা পাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।”