দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সিরোসিস অফ লিভারে আক্রান্ত হয়ে বাবার মৃত্যু। তার ঠিক পনেরো দিনের মাথায় কোমর্বিডিটির কারণে দাদার মৃত্যু। তারপর ১৮ দিন কাটতে না কাটতেই করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে মায়ের। বাবা ও দাদার শেষকৃত্য সম্পন্ন করার পর এখন মায়ের মৃতদেহ দাহের জন্য প্রশাসনের দরজায় দরজায় ঘুরছেন স্বজনহারা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়। মায়ের মৃত্যর পর এক সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। তবে এখনও দেহ পড়ে রয়েছে চুঁচুড়া হাসপাতালের মর্গে। ছেলে কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় রীতিমতো হতাশ। সরকারি উদাসীনতায় তাঁর মায়ের দেহ এখনও দাহ করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি তাঁর।
কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁর বাবা কালিকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় ২১ জুন সিরোসিস অফ লিভারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর ৬ জুলাই দাদা গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন। বৃদ্ধা মা মাধবী দেবী করোনা আক্রান্ত হন। ২৪ জুলাই প্রথমে তাঁকে ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা না দেখেই তাঁকে চুঁচুড়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেয় বলেই অভিযোগ। কিন্তু প্রায় ‘বিনা চিকিৎসা’য় মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। মৃত মায়ের দেহ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন ছেলে কৌশিক। কোনও চিকিৎসকই তাঁর মায়ের মৃত্যুর শংসাপত্র দিতে রাজি না হননি। বাধ্য হয়ে ধনেখালির থানার বড়বাবুর সাহায্য নেন তিনি। তাঁর তৎপরতায় মৃতদেহ চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যান কৌশিক। সেখানে তাঁর মায়ের কোভিড টেস্ট করা হয়। তাতেই রিপোর্ট আসে পজিটিভ। তারপর থেকে মায়ের মৃতদেহ মর্গেই পড়ে আছে অন্ত্যেষ্টির অপেক্ষায়।
[আরও পড়ুন: কবে বেরবে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফল? দিন ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর]
কৌশিকবাবু জানান, তিনি বিডিওকে চিঠি লিখে সরকারের পক্ষ থেকে মায়ের দেহ দাহ করার ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছেন। তা সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় রীতিমতো হতাশ ওই যুবক। রবিবার রাতে তাঁর মায়ের দেহ দাহ করা হতে পারে বলেই আশ্বাস জেলা প্রশাসনের। সেই আশ্বাস আদৌ বাস্তবায়িত হয় কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে অসহায় ওই যুবক।
[আরও পড়ুন: বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজবাড়িতে চলল গুলি, উদ্ধার রাজপরিবারের সদস্যের রক্তাক্ত দেহ]
The post দিনের পর দিন মর্গেই পড়ে করোনা রোগীর দেহ, সরকারি হাসপাতালের ‘গাফিলতি’তে আটকে সৎকার appeared first on Sangbad Pratidin.