সুব্রত বিশ্বাস: পড়ন্ত বিকেল হতে তখনও ঘণ্টা দুয়েক দেরি। আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষায় আম জনতা। লোকাল ট্রেন চলবে। চলছে প্রহর গোনা। করোনা পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে তা নিয়ে রাজ্য পুলিশ ও আরপিএফ আলোচনায় ব্যস্ত। হাওড়া (Howrah) স্টেশনে পাঁচ, ছয় নম্বর গেট যাত্রীর প্রবেশ দ্বার। হু হু করে যাত্রীরা ঢুকছেন। লোকাল ট্রেনের (Local Train) নির্ধারিত যাত্রী নন তারা। সবাই দূরপাল্লার ট্রেন ধরার জন্য হন্য হয়ে ঢুকছেন। কিন্তু অবাক করার মতো দৃশ্য যাত্রীদের চোখে পড়ছে। কোথায় কোভিড বিধি? সবটাই তবে আলোচনার পর্যায়ে থেকে গেল! যাত্রীদের এই প্রশ্নের যথার্থতা রয়েছে। সব গেট ফাঁকা। নেই আরপিএফ, টিসি, থার্মাল স্ক্যানার তো দুরস্থ। পরপর তিনটে গেটে নেই কেউই। কিছুটা দূরে চারজন মহিলা টিকিট পরীক্ষক নিজেদের মধ্যে আলোচনায় ব্যস্ত। বিধিবদ্ধ কাজে আগ্রহ না থাকলেও ফটো তুলতে দেখে দৌড়ে আসেন এক মহিলা টিকিট কালেক্টর। হিন্দিতে বেজায় ক্ষোভ, ডেকে পাঠান আরপিএফ। ডিআরএমের মৌখিক নির্দেশ নয়, চাই লিখিত আরপিএফ এএসআই এস সরকারের নির্দেশ।
[আরও পড়ুন: Phone Pay-এর ক্যাশব্যাক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফারের নামে প্রতারণা, ১০ হাজার টাকা খোয়ালেন যুবক]
করোনা বিধি যখন শিকেয় তখন আজ লক্ষ লক্ষ যাত্রীদের পরীক্ষার কী হাল হবে সে সম্পর্কে নিশ্চিত রেল আধিকারিক থেকে যাত্রীরা পর্যন্ত। এদিনও সাবওয়ে বন্ধ থাকলেও বুধবার খোলার কথা। শহরতলীর যাত্রীদের হাওড়া স্টেশন দিয়ে যে ভাবে বের করা হবে ও ঢুকতে দেওয়া হবে তা এতটাই ঠুনকো যে, লক্ষ লক্ষ যাত্রীর কাছে নেহাতই প্রহসন। ১১, ১২, ১৩, ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মের ট্রেনগুলির যাত্রীরা যাতায়াত করবেন ফুডপ্লাজার সামনে দিয়ে। এজন্য দড়ি দিয়ে ঘেরা হয়েছে। যাত্রীদের উষ্মা, এটা কি ঠাকুর দেখার লাইন? ভলান্টিয়ার দড়ি ধরে লাইন সামলাবেন। ওই প্লাটফর্মগুলি থেকে আরও একটি লেন কনকোর্সের ধার ঘেষে ৪, ৫ নম্বর প্লাটফর্মের সামনে দিয়ে এসে সাবওয়ে সামনে মিশেছে। এদিকে পূর্ব রেলের লোকালগুলি ১ থেকে ৬, ৭ নম্বর প্লাটফর্মে নেতা হবে। এজন্য ওই প্লাটফর্মে যাতায়াতকারীরা ফুড স্টলের পিছন দিয়ে ৪, ৫ নম্বর গেট ব্যবহার করতে পারবেন। এই অংশগুলি গার্ড রেল দিয়ে ঘেরা হয়েছে। যাত্রীরা এখনই প্রশ্ন তুলেছেন, অপ্রসস্থ স্থান দিয়ে কি ভাবে লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করবেন? নিউ কমপ্লেক্সেও লোকাল ট্রেনের যাত্রীদের জন্য কামসুন রেস্টুরেন্টের সামনের গেট নির্দিষ্ট হয়েছে। গুরুত্বপূর্ন হাওড়া স্টেশনে এই অপ্রসস্থ জায়গা দিয়ে কীভাবে ভেন্ডাররা মাল নিয়ে যাতায়াত করবেন, সে প্রশ্ন বড় করে দেখা দিয়েছে।
শিয়ালদহ স্টেশনে দক্ষিণের ট্রেন যাত্রীদের জন্য দুটি গেট দিয়ে ঢোকা ও একটি দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। ভিআইপি কনকোর্স তিনটি গেটের একটি দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্য। যা দিয়ে প্রবেশ ও বাহির করা যাত্রীদের। অন্য দুটি লোকালের যাত্রীদের ঢোকা এবং বেরোনোর জন্য। নর্থের যাত্রীদের উত্তর দিকের দুটি গেট থাকবে। একটি প্রবেশের, অন্যটি বাইরে বেরোনোর জন্য। প্রফুল দ্বারটি শুধু বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে। এছাড়া নর্থ থেকে সাউথে বা সাউথ থেকে নর্থে সরাসরি যাওয়া যাবেনা। যেতে হবে স্টেশনের বাইরে দিয়ে।
[আরও পড়ুন: ‘মমতার সঙ্গ ছাড়ার অর্থ বিজেপির হাত শক্ত করা’, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুকে বার্তা ফিরহাদের]
দেখুন ভিডিও: