ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: পুজো শেষ হতেই সুখবর। করোনা ভ্যাকসিন (Corona Vaccine) নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের। শুরু হল সলতে পাকানোর কাজ। জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের (ন্যাশনাল হেলথ মিশন) আওতায় কলকাতা, শিলিগুড়ি-সহ সাতটি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এবং বাকি সব পুরসভা-সহ সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং বেসরকারি কোভিড হাসপাতালগুলির কাছে সম্ভাব্য ভ্যাকসিন প্রাপকদের তালিকা চাওয়া হল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের (Ministry of Health and Family Welfare) সঙ্গে বৈঠকে প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে নভেম্বরের মধ্যেই কেন্দ্রের হাতে তালিকা তুলে দেবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর।
COVID-19 ভাইরাস প্রতিরোধী ভ্যাকসিন কীভাবে দেওয়া হবে? প্রথম দফায় কারা ভ্যাকসিন পাবেন? এইসব বিষয় ঠিক করার দায়িত্ব রাজ্যগুলির। বস্তুত, এদিনের বৈঠকে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের (National Health Mission) রাজ্যের নোডাল অফিসার সৌমিত্র মোহন এবং অন্য আধিকারিকদের তা আরও একবার স্পষ্ট করে দেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব আলোচনা প্রসঙ্গে বলেছেন, “পুরসভা ও সরকারি-বেসরকারি কোভিড হাসপাতালের কাছে গ্রহীতাদের নামের তালিকা চাওয়া হয়েছে। সেই তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।” রাজ্যের তরফে প্রস্তাব ছিল প্রথম দফায় স্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মরত সব সাফাই ও স্বাস্থ্যকর্মীদের তালিকার প্রথমে রাখা হোক। সেই প্রস্তাব মেনেছেন ন্যাশনাল হেলথ মিশনের আধিকারিকরা। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, বৈঠকের মধ্যেই পুরসভাগুলিকে দ্রুত নামের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন রাজ্যের নোডাল অফিসার সৌমিত্র মোহন। আলোচনার মধ্যেই তালিকার রূপরেখা কেমন হবে তা ‘পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’ করে স্পষ্ট করা হয়। রাজ্যের তরফে প্রশ্ন ওঠে কারা ভ্যাকসিন দেবেন? কারণ স্বাস্থ্য দপ্তরের যুক্তি, তাদের হাতে কোভিড প্রতিরোধী যথেষ্ট নার্স বা ডাক্তার রয়েছেন। রয়েছেন শুধুমাত্র রুটিন প্রতিষেধক দেওয়ার স্বাস্থ্যকর্মী। রাজ্যের যুক্তি শুনে বাস্তবিকই খুশি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, একইভাবে সব সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং বেসরকারি কোভিড হাসপাতালকেও নামের তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: পরিকাঠামোহীন হোম আইসোলেশনই রাজ্যে করোনায় মৃত্যু বাড়াচ্ছে! জরুরি বৈঠক স্বাস্থ্যসচিবের]
চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্য এবং সাফাইকর্মীদের মধ্যে কারও যদি অন্য উপসর্গ বা কো-মর্বিডিটি থাকে তাও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। এটা যেমন একটা দিক, তেমনই ‘হাই রিস্ক গ্রুপ’ বা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনির সমস্যা-সহ অন্য উপসর্গের রোগীদের যত বেশি সংখ্যায় এই তালিকায় আনা যায় তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ষাট বছরের বেশি বয়সের নাগরিকদের পৃথক তালিকা তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য দপ্তরের বিভাগীয় আধিকারিকের বক্তব্য, সীমিত সময়ের মধ্যে এমন পৃথক তালিকা তৈরি করা রীতিমতো কঠিন। কারণ, দেশ তো বটেই, কোনও রাজ্যেই স্বাস্থ্যশুমার হয়নি। নেই কোনও তথ্যভাণ্ডার। বস্তুত, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।