সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। পরিস্থিতি দেখে বৃহস্পতিবারই পুরো দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপরই গতকালের রেকর্ড ভেঙে শুক্রবার করোনার বলি হল ১৫ জন। এর ফলে বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭৫।
শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। এর ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল এক হাজার ৮৩৮ জন। আজ দুপুরে অনলাইনের মাধ্যমে এই সংক্রান্ত তথ্য দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। নিজের বাড়ি থেকে সংযুক্ত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও আইইডিসিআর (IEDCR)-এর পরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
[আরও পড়ুন: নায়িকা হয়েও ছাড় নেই! লকডাউনের নিয়ম লঙ্ঘন করায় জরিমানা দিতে হল অভিনেত্রীকে ]
এপ্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দু হাজার ১৯০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে আরও ২৬৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। ফলে দেশে মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে এক হাজার ৮৩৮ জন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গিয়েছেন আরও ১৫ জন। সেই সঙ্গে আরও নজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন মোট ৫৮ জন।দেশের প্রতিটি হাসপাতালে অক্সিজেনের ব্যবস্থা রয়েছে। যা করোনা ভাইরাসের রোগীর জন্য বেশি প্রয়োজন। তবে করোনা আক্রান্তদের ৮০ শতাংশের বেশি রোগীর কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না। অন্যদের অক্সিজেন সাপোর্ট ও কিছু ওষুধ লাগতে পারে। সারাদেশে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেন্টিলেটারের সাহায্য নিয়েছেন ২৭ জন। অর্থাৎ, প্রায় এক দশমিক ৮ শতাংশ রোগী এই সাপোর্ট নিয়েছেন। এই হারে ১০ হাজার রোগী যদি আইসিইউ সাপোর্ট নেন, তাহলে ১৮০টি ভেন্টিলেটার লাগবে।
আইইডিসিআর পরিচালক ডা. ফ্লোরা জানান, আক্রান্ত এক হাজার ৮৩৮ জনের মধ্যে বর্তমানে হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন প্রায় ৫০০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ মানুষ বাড়িতে ও ৩২ শতাংশ হাসপাতালে চিকিৎসা করাচ্ছে। তবে হাসপাতালে যারা ভরতি হয়েছেন তাঁদের সবার ভরতি হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। কিন্তু, সামাজিক চাপের কারণে তাঁদের বাড়িতে না রেখে হাসপাতালে ভরতি করে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইনেও বলা আছে, কেউ চাইলে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিতে পারেন, এতে হাসপাতালের ওপর চাপ কম পড়বে। দেশে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ২১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। মোট আক্রান্তদের মধ্যে ৬৮ শতাংশ পুরুষ ও ৩২ শতাংশ নারী।
[আরও পড়ুন: একদিনে ১০ জনের মৃত্যুর জের, জরুরি অবস্থা বাংলাদেশে]
বুলেটিনে করোনার সংক্রমণ রুখতে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এই সংখ্যা। তাই প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া ও মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
The post বাংলাদেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত ১৫, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১৮৩৮ appeared first on Sangbad Pratidin.